
রাজিব রায়হান, প্রতিনিধি জাবি:
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শেখ হাসিনা হল ও শেখ রাসেল হল কমিটি ঘোষণা করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন।
দীর্ঘ সাত বছর পর হল কমিটি ঘোষণা করা হলেও এতে পদস্থ হয়েছেন বিবাহিত ও বিতর্কিতরা। অভিযোগ উঠেছে তড়িঘড়ি করে কমিটি দিতে গিয়ে এরকম হয়েছে।
কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের নিয়ম ভঙ্গ করে শেখ হাসিনা হল কমিটিতে সহ-সভাপতি পদস্থ হয়েছেন মীর নিশাত নাওয়ার ও যুগ্ম সম্পাদক ফাতেমাতুজ জোহরা।
নাওয়ার গতবছরের ২৩ শে আগস্ট বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহিত কোন ছাত্রছাত্রী ছাত্রলীগের কোন পদধারী হতে পারবেন না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ৫ (গ) তে বলা হয়েছে, বিবাহিত, ব্যাবসায়ী ও চাকুরীতে নিয়োজিত কোনো ছাত্রছাত্রী ছাত্রলীগের কর্মকর্তা হতে পারবে না।
তবে ফাতেমাতুজজোহরা দাবি বলেন, “পরিবারের সম্মতিতে আমার এঙ্গেজমেন্ট থেকে আকদ পর্যন্ত হয়েছিল কিন্তু পরে একপর্যায়ে সেটি ভেঙ্গে যায়। পরে আর আমাকে উঠায়ে নেওয়া হয়নি।”
কমিটিতে স্থান পাওয়া শেখ রাসেল হলের সভাপতি জোবায়েদ সাদিক আশিক, সাধারণ সম্পাদক অলক কুমার পাল ও মোস্তফা ফয়সাল রাফির বিরুদ্ধে একাধিক মারধর ও হল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া শেখ হাসিনা হল কমিটিতে সহ-সভাপতি পদ পেয়েছেন বিবাহিত ছাত্রী মীর নিশাত নাওয়ার যা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) এর পরিপন্থী।
শেখ রাসেল হলের সভাপতি জোবায়েদ সাদিক আশিকের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২১ শে মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগের উপ-ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ফয়সালকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয় ফয়সালকে ডেকে নিয়ে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ চত্বর সংলগ্ন পুকুর পাড়ে নিয়ে কিল-ঘুষি দেন। এ সময় সাথে থাকা ফয়সালের বান্ধবী মারধর ঠেকাতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করেন ।
এ সময় তার বান্ধবীর গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনতাই করারও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ২০১৮ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমানের পরিচয় জানতে চায় আশিক।
তার জামার হাতা গুটানো জানতে চাওয়ায় আশিকুর কৈফিয়ত দিতে অস্বীকার করলে তাকে মারপিট শুরু করে এবং মারপিটের একপর্যায়ে তাকে পাশের লেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, কেউ তথ্য গোপন করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যাদেরকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে তাদের সবাই সক্রিয় কর্মী।
উল্লেখ্য, জোবায়েদ সাদিক আশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ্ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী, অলক কুমার পাল বাংলা বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী, মোস্তফা ফয়সাল রাফি অর্থনীতি ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর নিশাত নাওয়ার ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী।