
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি: বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের ৫২ তম সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকার ধামরাইয়ে জাতীয় পতাকা বিক্রির ধুম লেগেছে। ধামরাইয়ের অলিগলিতে, গ্রামের ভিতরেও পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। সারা বছর পতাকা বিক্রি করতে দেখা না গেলেও ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে ছোট বড় আকারের পতাকা, বিজয়ের ফিতা, হাত পতাকাসহ মহান বিজয় দিবস লেখা বেস লাইট বিক্রি করতে দেখা যায়।
গতকাল রোববার (১৭ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে পৌরসভার নতুন দক্ষিণ পাড়া এলাকায় আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। শুধু তাই নয় উপজেলা চত্বর, ধামরাই বাজার, কালামপুর বাজারের রাস্তায়ও পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। কিন্তু তাদের বেশির ভাগই মৌসুমি পতাকা ব্যবসায়ী।
আনোয়ার হোসেন(৫০) নামে এক ব্যক্তিকে পতাকা বিক্রি করতে দেখা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের নতুন দক্ষিণ পাড়া এলাকায়। আনোয়ার হোসেন সাভার উপজেলার চাকলগ্রাম এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ২০ বছর ধরে বিজয় দিবসের পতাকা বিক্রি করে থাকি। বছরে ৬ মাস পতাকা বিক্রি করি। এর মাঝে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে সংসার চালাতে হয়। শুধু ব্যবসার জন্য নয় ভালোবেসে দেশের প্রতি, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ভালোবাসার টানে পতাকা বিক্রি করে থাকি।
দেখা যায়, আনোয়ার হোসেনের কাছে বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী দেখা মাথায় বাধার ফিতা, হাত পতাকা বিক্রি করছে। ফিতা ২০ টাকা, হাত পতাকা ১০ টাকা, আড়াই ফিটের পতাকা ৫০ টাকা, সাড়ে তিন ফিটের পতাকা ১০০ টাকা, বড় আকারের ৫ ফুটের দৈর্ঘ্যের পতাকা ১৫০ টাকায় বিক্রি করে থাকেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, দিনে ৪০০০-৫০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করে থাকি। এতে ৬০০- ৮০০ টাকা লাভ হয়। সকাল থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করি।
আনোয়ার হোসেনের দুই ছেলে, দুই মেয়ে এবং স্ত্রী জেসমিনকে নিয়ে ৬ জনের সংসার। বছরে ৬ মাস পতাকা বিক্রির টাকায় সুন্দর সংসার চলে। আনোয়ার হোসেন ২১ শে ফেব্রুয়ারী, ২৬ শে মার্চ, ১৬ ই ডিসেম্বর আসলেই নেমে পড়েন পতাকা বিক্রি করতে।
পৌরসভার তালতলা এলাকায় শাহীন একাডেমিক স্কুলের পাশে শফিকুল ইসলাম মহব্বত নামে এক ব্যক্তিকে পতাকা ক্রয় করতে দেখা যায়।
শফিকুল ইসলাম মহব্বত বলেন, আমি ছেলে মেয়ে দুই জনের জন্যই পতাকা, মাথায় বাধার ফিতা ক্রয় করেছি। বিজয় দিবসের মাস আসলেই পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। তিনি শাহীন একাডেমিক স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী লেখা পতাকা, মাথার ফিতা কিনে দিতে দেখা যায়।
দেখা যায়, ৪র্থ শ্রেণির লিখন, ২য় শ্রেণির মুরাদ ও মোস্তফা এবং নার্সারী ক্লাসের আল্লাদী নামে শিক্ষার্থীদের পতাকা কিনে দেন শফিকুল ইসলাম মহব্বত। সকলেই শাহীন একাডেমিক স্কুলের শিক্ষার্থী।
আনিসুর রহমান জামাল নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমার ছেলে মেয়ে দুইজনের জন্যই পতাকা ক্রয় করেছি। ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। বিজয় দিবস ও ৫২ তম সূবর্ণজয়ন্তীতে পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায় অনেককেই। ছেলে মেয়েদের দেশ স্বাধীনের ইতিহাস শুনিয়ে থাকি।
কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে উপজেলা চত্বরে পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আমি শুধু ১৬ ই ডিসেম্বর আসলেই পতাকা বিক্রি করি। লাভ ভালোই হয়। তার চেয়ে পতাকা বিক্রি করি দেশের প্রতি ভালোবাসার কারণেই।