জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেয়েদের খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য গাছ কাটার প্রতিবাদে কনস্ট্রাকশন এলাকার টিনের বেড়া ভেঙে দিয়েছে একদল শিক্ষার্থী।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হল ও খালেদা জিয়া হলের মধ্যবর্তী স্থানে মেয়েদের খেলার মাঠ নির্মাণের কাজ শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানিয়ে কনস্ট্রাকশনের টিনের বেড়া ভেঙে দেন। পরে রাতে কনস্ট্রাকশনের ব্যবহৃত যন্ত্রচালিত গাড়ি এক্সকেভেটর ক্যাম্পাসের বাইরে বের করে দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গাছ কাটা যাবে না।
এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলী বলেন, "আমরা প্রশাসনকে একাধিকবার মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন বলেছিলো মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে। তাই আমরা বলেছিলাম মাস্টারপ্ল্যান যেহেতু হচ্ছে তাহলে, এটা হওয়ার পরেই পরিকল্পিত ভাবে গাছ কাটা হোক।
কিন্তু এর মধ্যেই আইবিএ ভবনের জন্য সুন্দরবনে রাতের আধারে গাছ কাটা হলো। ঠিক এভাবেই শেখ হাসিনা হল ও খালেদা জিয়া হলের ওখানেও জঙ্গল সাফ করার নামে ৭ থেকে ৮টা গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কাটার পর আমরা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলে গাছ কাটার বিষয়ে কিছু জানে না।"
তিনি আরো বলেন, "আর যেহেতু গাছ কাটাকে আড়াল করার জন্য বেড়া দেওয়া হয়েছিল তাই একপর্যায়ে সেখানে থাকা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বেড়াটা ভেঙ্গে ফেলে। আর ওখানে থাকা গাছ কাটার যন্ত্রচালিত গাড়ি এক্সকেভেটর ক্যাম্পাসের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। আমরা শুধু চেয়েছি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন না করে যেন কোনো প্রকারের গাছ কাটা না হয়।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বসম্মতিক্রমে ওই জায়গাটাতে মেয়েদের খেলার মাঠ করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কোনো গাছ কাটা হবে না। যেহেতু গাছের ঘনত্ব খুবই কম।
গাছের ফাঁকে ফাঁকে খেলার জায়গা তৈরি করা হবে। সেখানে কোনো গাছ কাটা হয়নি, বালুর ট্রাক নিয়ে আসার জন্য ঝোপঝাড় পরিস্কার করা হয়েছে। মেয়েদের জন্য খেলার মাঠ মেয়েরা যদি মাঠ না চায় তাহলে কাজ করা হবে না।"
তিনি আরো বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী চাইলে তো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে না। আর যদি কাজ বন্ধ করতে হয় তাহলে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে আলাপ-আলোচনা করা উচিত।
কিন্তু তারা আলাপ না করে টিনের ঘেরা বেড়া ভেঙে দিয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছে, তাদের দুটি হ্যালোজেন লাইট আর এক কয়েল ক্যাবল নিয়ে চলে গেছে। আলাপ আলোচনা না করে বেড়া ভেঙে ফেলা, লাইট নিয়ে চলে যাওয়া কোন ধরনের নৈতিকতার মধ্যে পড়ে? এটা ছাত্র-শৃঙখলা বিধি পরিপন্থী।"
অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. নাছির উদ্দিন বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বসম্মতিক্রমে ওই জায়গাটাতে মেয়েদের খেলার মাঠ করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবুও কাজ শুরু করার পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়।"
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.