Site icon Daily Dhaka Press

জাবি উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্রলীগ সম্পাদকসহ চাকরি প্রার্থীর বৈঠক!

জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রভাষক পদে চাকরি প্রত্যাশী এক নারী শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটন এবং ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও দর্শন বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আনিকা সুবাহ উপাচার্যের বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে আসেন।

রাত আটটার দিকে প্রথমে আনিকা সুবাহ বাসভবন থেকে বের হয়ে যান। তার ৫ মিনিট পর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটন বাসভবন থেকে বের হন।

এ সময় উপাচার্যের বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান ও একজন সহকারী প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আনিকা সুবাহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটনের মেয়ে বন্ধু। তিনি বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটে (বিআইসিএলসি) প্রভাষক পদে চাকরি প্রত্যাশী।

ফলে মো. হাবিবুর রহমান লিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে তদবির করছেন।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, একজন প্রভাষক পদে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থী এবং প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতাকে নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে সন্ধ্যায় সাক্ষাৎ করা মানে এক প্রকার চাকরির দেন দরবার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চাকরি প্রত্যাশী কোনো ব্যক্তির সাথে উপাচার্যের বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিনে সন্ধ্যায় দেখা করাটা নৈতিকতা পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটন ও চাকরি প্রত্যাশী আনিকা সুবাহ’র সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।

তবে এর আগে একই বিষয়ে একটি গণমাধ্যমকে তিনি মোবাইলে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, “তোমাকে কে বলেছে আমি জানি। তুমি এখনই আমার সঙ্গে এসে দেখা করো।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান বলেন, “আমি তাদের সেখানে যাওয়ার বিষয়টি আগে থেকে জানতাম না।

ঐ দিন মন্দিরে চুরির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ভিসি স্যারের বাসার সামনে আন্দোলন করায় আমি সেখানে গিয়েছিলাম এবং পরে তাদের দেখতে পাই। তবে তারা কি বিষয়ে কথা বলেছিল আমি সেটা জানিনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী স্যারের সাথে দেখা করতে পারে। এতে কোনো সমস্যা দেখি না।”

অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, “ওরা এসে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে যে কেউ আমার বাসভবনে আসতে পারে। আনিকা সুবহা চাকরির জন্য আবেদন করেছে কি না- সেটা আমি জানিনা।”

নিয়োগের তদবিরের ব্যপারে উপাচার্য বলেন, “সে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ইনস্টিটিউট শিক্ষক প্রার্থী কিনা সে ব্যপারে আমি অবগত ছিলাম না।”

Exit mobile version