জাবি প্রতিনিধি: হোটেলে খাবার শেষে টাকা চাওয়ায় দোকানীকে মারধর করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রলীগ নেতা।
গত রবিবার (৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকার সিংগাইর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী দোকানী মো. আব্দুল কাদের দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে খাবার বিক্রি করেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত আল রাজী সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ৪৫ তম ব্যাচের আবাসিক ছাত্র এবং শাখা ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রবিবার দিবারাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সিংগাইর হোটেলে খাবার খেতে যান অভিযুক্ত আল রাজী। খাবার শেষে ক্যাশ টাকা না থাকায় পরে দিতে চাইলে দোকানী বাকি দিতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রলীগ নেতা তার কাছে ক্যাশ টাকা নেই বলে জানান। মোবাইল ব্যাংকিং নগদে তিনি দিতে পারবেন। পরে দোকানী জানান তার নগদ একাউন্ট নেই বিকাশ একাউন্ট আছে। এ সময় অন্য একজন ক্রেতা জানান তার নগদ একাউন্ট রয়েছে তাতে টাকা পাঠালে তিনি দোকানদারকে ক্যাশ টাকা দিয়ে দেবেন। এক পর্যায়ে আল রাজী পাওনা টাকা নগদ একাউন্টে পাঠানোর পরই চড়াও হয়ে দোকানদারকে মারধর করেন।
ভুক্তভোগী দোকানদার আব্দুল কাদের জানান, গতকাল নির্বাচনের জন্য সব দোকান বন্ধ ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অনুরোধে আমি খাবার রান্না করি।
ওই শিক্ষার্থী (অভিযুক্ত) যে খাবার খায় তার দাম আসে ১২০ টাকা। পরে তার কাছে ক্যাশ টাকা না থাকলে নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে চায়। আমি তখন বলি আমার শুধু বিকাশ অ্যাকাউন্ট আছে।
পরে পাশ থেকে আরেক ক্রেতা বলেন তার একাউন্টে টাকা পাঠালে তিনি আমাকে ক্যাশ টাকা দিয়ে দেবেন।
ওই ক্রেতার নাম্বারে টাকা পাঠিয়েই একজন (আল রাজী) আমাকে মারধর করেন। এর আগেও ওই ছাত্র আমার দোকানে খাবার নিয়ে টাকা দেয়নি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই দোকানদার আরও বলেন, যে আমাকে মারধর করেছে সে আমার ছেলের বয়সী। এই বুড়া বয়সে সে আমার শিক্ষিত স্ত্রীর সামনে মারধর করলো। আমার স্ত্রীকেও সে ধমকিয়েছে।
আল রাজীর সঙ্গে থাকা এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, ওই দোকানে খাবার খাওয়ার পর আল রাজী ভাই টাকা নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দিতে চেয়েছিলেন।
পরে দোকানে থাকা এক সাংবাদিকের নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিলেন। এ সময় আমি দোকানের বাইরে ছিলাম।
পরে এসে দেখি রাজী ভাই দোকানিকে একটা ঘুষি মেরেছেন। তখন আমি ভাইকে নিয়ে চলে গেছিলাম।
তবে দোকানিকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আল রাজী জানান, খাবার খাওয়ার পর আমার কাছে ক্যাশ টাকা ছিল না।
পরে তাকে নগদে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু তার কাছে নগদ অ্যাকাউন্ট ছিল না। তাই অন্য এক ক্রেতার নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়েছিলাম। তাকে মারধর করিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, এ ঘটনা আমার জানা নেই। যদি কেউ এমন করে থাকে তবে সেটা তার কাম্য নয়।
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.