Site icon Daily Dhaka Press

জাবিতে বান্ধবীসহ ঘুরতে আসলেই ছিনতাই করে একটি চক্র

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বান্ধবীসহ ঘুরতে আসলেই তাদের টার্গেট করেন একটি ছিনতাই চক্র। পরে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেন তারা।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, ছিনতাইকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছে থাকা নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে তারা। তবে মোবাইল ছিনিয়ে নেন না ছিনতাইকারীরা।

গত ১৯, ২০, ২১ তারিখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ছায়ামঞ্চ ও সেন্ট্রাল ফিল্ড এলাকায় এমন তিনটি  ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল ২১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগরে বান্ধবীসহ ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের ছাত্র মো. মামুন অর রশিদ। এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় তিনি একটি অভিযোগও করেছেন। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগরে নামার পর দুইজন অপরিচিত আমাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে।

পরবর্তীতে আরেকজন তাদের সাথে যোগ হয়। তারা আমাদের সেন্ট্রাল ফিল্ডের এক কোণে নিয়ে যায়। তারপর পিছন থেকে চাকু ধরে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং জোরপূর্বক মানিব্যাগ এবং বিকাশ থেকে ৭৫০ টাকা নিয়ে নেয় (বিকাশ নম্বর: ০১৮৭০০০৮৫১০)। এছাড়াও তারা আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং এলোপাতাড়ি কিলঘুসি লাথি মেরে জখম করে।

এর আগে, গত ১৯ জানুয়ারি পাখি মেলায় ঘুরতে এসে গন বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশ নামের এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ছায়ামঞ্চ এলাকা থেকে ছিনতাইয়ের শিকার হন। এসময় আকাশের সাথে গন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো তিনজন নারী শিক্ষার্থী ছিল। একটি হলুদ বাইকযোগে এসে দুষ্কৃতিকারীরা এই ছিনতাই পরিচালনা করেন। ছিনতাই করে মীর মশাররফ হোসেন হলের রাস্তা হয়ে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়।

এরপর গত ২০ জানুয়ারি একই জায়গায় ঘুরতে এসে ছিনতাইয়ের শিকার হন শরিফুল ইসলাম। গাবতলী এলাকা থেকে বান্ধবী নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছিলেন তিনি। তিনি জানান, দুপুর বেলা সপ্তম ছায়ামঞ্চের বসার পিলাগুলোতে আমরা বসে ছিলাম।

এসময় তিন জনের একটি গ্রুপ আমাদের নানান প্রশ্ন করা শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে চড় থাপ্পর দিতে থাকে। আমার বান্ধবীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে সাথে থাকা নগদ টাকা নিয়ে তারা আমাদের ছেড়ে দেয়।

খোজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল সংলগ্ন রাস্তা, সপ্তম ছায়ামঞ্চ সংলগ্ন মীর মশাররফ হোসেন হলমুখী রাস্তা, জিমনেসিয়াম এলাকা সংলগ্ন রাষ্ট্র ও সেন্ট্রাল ফিল্ডে নিয়মিত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত বছরের ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম এলাকায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা ছিনতাইয়ের শিকার হন। অভিযুক্তরা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জয় পাল এবং বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মারুফুল হাসান মারুফ।

ঘটনা প্রমানিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। অন্যদিকে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর আশুলিয়া এলাকার বাসিন্দা মো. ওমর আলী নামে এক মোবাইল মেকানিক ছিনতাইয়ের শিকার হন। এসময় হাতেনাতে অন্ত্রসহ দুইজন আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে তাদের আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক জাবি শিক্ষার্থী অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (৫০ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। আটক আরেকজনের নাম রোমিও রাজু। তিনি সিটি ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে অধিক পরিমানে লোকসমাগম হচ্ছে। বহিরাগত ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া অনেকটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। গোটা ক্যম্পাসে আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা আছে। কেউ ছিনতাইয়ের শিকার হলে আমাদের যেন দ্রুত জানায়। তাহলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো।

এ বিষয়ে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে আমরা প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নিবে।

Exit mobile version