ডেস্ক রিপোর্ট : আজ রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও অ্যাসোসিয়েশন অফ স্কিন কেয়ার এন্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড বাংলাদেশের সঙ্গে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন বাংলাদেশের কসমেটিক্স বাজার বেস সম্ভাবনাময়। কিন্তু কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। এসব সমস্যার কারণে ভোক্তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি দেশেরও ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে।
বাংলাদেশে কসমেটিক্স খাত এখনো আমদানি ও লাগেজ নির্ভর। পাশাপাশি নকল পণ্যে বাজার সয়লাব হচ্ছে, দেদারসে দেশে ঢুকছে মানহীন পণ্য। এতে করে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন। ফলে নানাবিধ রোগ-বালাই দেখা দিচ্ছে। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টির জন্য ভেজাল ও মানহীন কসমেটিকস পণ্য দায়ি হলেও তার যথাযথ তদারকি না থাকায় ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন।
বিদেশী কসমেটিকস ব্র্যান্ডগুলো এরই মধ্যে বাংলাদেশে তাদের পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে এসেছে। যা আমাদের অর্থনীতির জন্য খুবই ইতিবাচক। বিদেশীদের পাশাপাশি দেশে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে মানহীন পণ্যে বক্তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রায় সম্পূর্ন আমদানি নির্ভর এই খাতের বাজার মূল্য প্রায় ২১ হাজার ৫শত কোটি টাকা।
লাইট ক্যাসেল পার্টনারস এবং অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের মতো গবেষণা সংস্থাগুলোর ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের স্কিন কেয়ার বা পারসোনাল কেয়ার শিল্পের আনুমানিক বাজারের আকার ২০২০ সালে ছিল ১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। ২০২৭ সালের মধ্যে এর আকার ২ দশমিক ১২ বিলিয়নে পৌঁছাবে বলে আশা করছে তারা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ৮ দশমিক ১ শতাংশ হারে এই শিল্প বৃদ্ধি পাবে।
আমদানি বিকল্প দেশিয় শিল্পের বিকাশ ঘটলে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। উপরন্তু, রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। তাই নীতিনির্ধারণে অগ্রাধিকার তালিকায় শীর্ষে থাকা উচিত স্থানীয় বিনিয়োগ সুরক্ষা। বর্তমানে কতিপয় মানহীন ও ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ির খবর প্রায়শই দেখা যায়। এসব ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন।
পড়ে যাচ্ছেন বড় ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাই স্থানীয় উৎপাদনকে নীতি সহায়তা দিয়ে মানসম্মত পণ্য ক্রেতাদের জন্য সুলভ করা জরুরী।কালার কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার পণ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের স্থাপিত স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এই কারখানা সমূহে প্রত্যক্ষভাবে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং পরোক্ষভাবে প্রায় লক্ষাধিক জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি বিপুল জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা হবে।
বর্তমানে এই শিল্পে প্রকৃত উৎপাদনকারী না থাকার কারণে দেশের জিডিপিতে এই শিল্পের অবদান নেই বললেই চলে। কিন্তু সরকার যদি নতুন এই শিল্প বিকাশে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে তাহলে দেশীয় উৎপাদনকারীরা সফল হবে এবং আমদানি নির্ভর শিল্পটি একটি উৎপাদনশীল শিল্পে রূপান্তরিত হবে এবং দেশ ও জনগণের উন্নয়নে দেশের জিডিপিতে এই শিল্প ব্যাপক অবদান রাখবে।
পাশাপাশি আমাদের দেশীয় কারখানা থেকে উৎপাদিত স্কিন কেয়ার ও কালার কসমেটিক্স পণ্যসমূহ রপ্তানি করার উদ্দেশ্যে পণ্যের গুণগত মান বিবেচনায় নিয়ে পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে যেন পণ্যগুলো রপ্তানি করা সম্ভব হয়।
যেহেতু বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হচ্ছে রপ্তানি; সেহেতু রপ্তানিতে নতুন নতুন খাত সংযোজন করা হলে বিদ্যমান রপ্তানিযোগ্য শিল্পসমূহের উপর নির্ভরশীলতা কমবে। তাই এই শিল্প সফলতায় সরকারের বিশেষ দৃষ্টি একান্ত ভাবে প্রয়োজন।
আর ও বলেন পণ্য বহুমুখীকরণের বিষয় বিবেচনা ও আমদানি বিকল্প পণ্য বিবেচনায় এই শিল্প একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় খাত। কিন্তু এই সম্ভাবনার বিকাশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চোরাই পথে আসা মানহীন পণ্য।
পরিচালক জনাব শাকিব খানের বক্তব্যে বলেন আপনারা জানেন নকল ও ভেজাল কসমেটিকসে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। নকল ও ভেজাল কসমেটিকস ব্যবহার করে মানুষ স্কিন ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নকল ও ভেজাল কসমেটিকস পণ্য বিক্রি করে ভোক্তাদের প্রতারিত করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত যা ক্রমশ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। আমরা মনে করি পরিস্থিতি যাতে আরো খারাপ না হয় সেক্ষেত্রে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।