Site icon Daily Dhaka Press

জাবিতে ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ শীর্ষক মশাল মিছিল

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণধর্ষণের ঘটনায় মশার মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মশাল মিছিলে অংশগ্রহণ করে।

রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে মীর মশাররফ হোসেন হল, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, ছাত্রীদের আবাসিক হল, প্রান্তিক গেট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এ সময় তাদেরকে ‘ক্যাম্পাসে ধর্ষণ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দর্শকের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘প্রশাসনের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘বাহান্নর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘অ্যাকশন টু একশন ডাইরেক একশন’, অবৈধ ছাত্র, মানি না মানবো না’, ধর্ষকের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ইইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭ বছর শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, জাহাঙ্গীরনগর ধর্ষকদের নয়, আমরা প্রশাসনকে বলে দিতে চাই এই ক্যাম্পাসে ধর্ষকদের মদদদাতাদের কোন ঠাই নাই।

এই বিশ্ববিদ্যালয় যে গণরূম কালচার চলে আসছে এই কালচারে কোন বন্ধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে না এখনি করে উঠে মাদকের সম্পর্ক অপরাধের সম্পর্ক।

বিশ্ববিদ্যালয় আমাদেরকে সিস্টেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষকে পরিনত করেছে। গনরুম কালচাল একজন শিক্ষার্থীর মানসিকতা পরিবর্তন করে দেয়। তার  মানসিকতা বিবৃত করে ধর্ষকে পরিনত করতে সহায়তা করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবীব বলেন, ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনায় আমাদের এতদিনের যে ধারণা ছিল যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে নিরাপদ, তা আর রইল না।

আমরা জোর গলায় বলতে চাই, এই ক্যাম্পাসে ধর্ষকদের কোন জায়গা নেই, ধর্ষকদের যারা লালন করে সেই কুলাঙ্গারদেরও কোন স্থান নেই।

যে সংগঠন, যে শিক্ষক, যে বক্ষক এদের মদদ দেয় তাদেরকে অবিলম্বে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার (একাংশের) আহবায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের নিকট নিরাপদ নয়, সেখানে বহিরাগত কিভাবে নিরাপদ থাকবে।

যখন শিক্ষার্থীরা দেখে তারই শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনি স্ট্রাকচার্ড কমিটি হওয়ার পরেও নিরাপদে ক্লাস নিতে পারেন সেখানে নিজেরা করলে দোষ কোথায়? এম এইচ হলের অছাত্রদের দাপটে বিভিন্ন সময়েই ছিনতাই, লুটপাট, চাঁদাবাজির খবর আমরা দেখি।

প্রশাসনকে বারংবার তাগাদা দেয়ার পরেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেন না অথাবা অভিযোগ গেলেও তা আড়াল করেন। এই হলেই শাহ পরান আছে কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।

এভাবেই ধর্ষকরা ক্রমাগত বেঁচে যাচ্ছে প্রশাসনের ছত্রছায়ায়। মূলত প্রশাসনের উদাসীনতাই বিশ্বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসকের চেয়ারে বসা কিছু নরাধমের নিকট জিম্মি হয়ে আছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মনিকা ইয়াসমিন বলেন, প্রথম বর্ষের যে সকল শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ঠিক মতো কথা বলতে পারে না।

তারাই কোন এক গোষ্ঠীর ছত্র ছায়ায় ধর্ষকে পরিনত হয়। ধর্ষকের মাথর উপর কার হাত আছে তাকে খুজে বের করতে  হবে। সমূলে ধর্ষন কে নির্মূল  করতে হবে।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বান্নাহ বলেন, নিরানব্বইয়ে মানিকে তারিয়ে আমরা এই ক্যাম্পাসকে পবিত্র করেছিলাম । আজ মানিকের উত্তরসূরীরা ক্যাম্পাস কে আবার কলঙ্কিত করেছে।

আমাদের  ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল প্রক্টরের তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন।

নাটক ও নাট্য তত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় বলেন, ছাত্রলীগ তার ধর্ষণের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেছে। এটা নতুন নয় ৯৮ তে ধর্ষন করেছে মানিক আজকে তার উত্তরসূরীরা করছে।

প্রক্টর ধর্ষকদের পালাতে সাহায্যে করেছে।তাদের পদে বহাল থাকার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছে।প্রশাসন আর ছাত্রলীগের অবৈধ সংগমে এই ধর্ষকের জন্ম হয়েছে।”

আগামীকাল বেলা ১১ টায় পোস্টারিং কর্মসূচি ঘোষনার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।

Exit mobile version