
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে অল্প দিনের ব্যবধানে দুই শিশুর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
যারা এই ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য দিয়েছেন।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ডিবিতে আয়ানের বাবার আবেদন ও খতনা করাতে গিয়ে আরেক শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জেনেছি। থানাগুলোতে মামলা হয়েছে। ডিবি পুলিশ ছায়া তদন্ত করছে।
বাবা-মায়ের কোল থেকে এভাবে শিশু হারিয়ে যাবে এটা কোনোভাবেই মানা যায় না জানিয়ে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
তিনি বলেন, এর আগে এলাকায় কোনো ধরনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ছাড়াই সুন্নতে খতনা করানো হতো।
কিন্তু এখন কথিত কিছু অবৈধ ভুয়া ক্লিনিকে ছোট ছোট শিশুদের খতনার নামে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করা হচ্ছে। কিন্তু পরে আর জ্ঞান ফিরছে না।
এমন কি এসব ক্লিনিকের অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার অনুমোদনও নেই।’
আয়ানের বাবাকে হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আয়ানের বাবা ডিবিতে মামলা তদন্তের আবেদন করলে আমরা তদন্ত করব।
প্রতিষ্ঠান অনেক বড়। তিনি সাধারণ মানুষ, প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লড়াই করে পারবেন না। তবে আমরা তার পাশে আছি।
হাসপাতালটির অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার অনুমোদন ছিল না। তারপরও তারা অ্যানেস্থেসিয়া দিয়েছে। শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনার দায় তারা এড়াতে পারে না।’
এর আগে আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে লিখিত অভিযোগ দেন শিশু আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ।
এ সময় শামীম আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে হত্যার ভয় দেখানো হচ্ছে। এই ঘটনায় আমি শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। ঘটনায় জড়িতদের কেউ ধরতে পারছে না।
অথচ রামপুরার জে এস হাসপাতালে যে শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো সঙ্গে সঙ্গে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ এই ঘটনার দুই মাস হলেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘সুন্নতে খতনা করাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা দুই ঘণ্টায়ও শেষ হয়নি।
মূলত আমার ছেলেকে সুন্নতে খতনা করানোর নামে ইন্টার্ন শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হয়েছে। এই ক্লাস করাতে গিয়ে অতিরিক্ত অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ ও রক্তক্ষরণের কারণে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
এক ঘণ্টার একটা ক্লাসের বলি হতে হলো আমার ছেলে আয়ানকে। এই ঘটনায় জড়িত দুই চিকিৎসকসহ হাসপাতালের ৮ জনের বিরুদ্ধে আমি ডিবিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।