রাজিব রায়হান, জাবি প্রতিনিধি: গত ২৩ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনকে অবাঞ্ছিত করার ঘটনায় ২৭জানুয়ারি তদন্ত কমিটি করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে সরেজমিন প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এদিকে নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণ সময় অতিবাহিত করলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারে নি তদন্ত কমিটি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একদিনের জন্যও আসে নি কমিটি। এটিকে তদন্ত করতে এসে কমিটির 'নিখোঁজ' হওয়া বলছেন অনেকেই।
এর আগে, গত ২৩ জানুয়ারি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে অন্য হলের নেতা-কর্মীদের খোঁজ না রাখা, হল কমিটি না দেওয়া, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ তুলে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তারই অনুসারী ছয় হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাবিবুর রহমান লিটনের বিক্ষুব্ধ অনুসারিরা তার পদত্যাগের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন।
সিনিয়র নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় না করে হল কমিটি দেওয়ায় গত ৩১ জানুয়ারি রাতে বিক্ষুব্ধ অনুসারিরা মিছিল বের করে হাবিবুর রহমান লিটনের আবাসিক হলের সামনে অবস্থান নেন। এছাড়া লিটনের পদত্যাগের দাবিতে চলতি মাসের ২ তারিখে কালো পতাকা মিছিল ও ৩ তারিখে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষুব্ধরা।
তবে এসব দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে গত ২৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি দশ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবদেন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দিতে পারে নি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতা জানান, সম্পাদককে অবাঞ্ছিত করার ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কর্তৃক তদন্ত কমিটি একটি আইওয়াশ ছিল। তারা লোকদেখানো তদন্ত কমিটি করে আমাদেরকে শান্ত রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তদন্ত কমিটির স্বাভাবিক কার্যক্রমের নিয়ম ভঙ্গ করেছে।
সংগঠনের সহ-সভাপতি ফারহান আনজুম তানজিল বলেন, সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণার এতদিন পরেও নির্দ্বিধায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলও নির্বিকার আছেন।
অন্যায়-অনাচারে জর্জরিত এই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি এতদিনেও বহাল থাকা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে আহ্বান জানাই, তারা যেন দ্রুত তদন্ত কমিটির প্রতিবদেন জমা দিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে জাবি ছাত্রলীগের কলঙ্ক মুক্ত করে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক তানান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন কমিটি গঠিত হওয়ার দশ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা ছিল। তবে জাহাঙ্গীরনগরে সাম্প্রতিক ধর্ষণ কান্ডে উদ্ভূত অস্থীতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আমরা আনঅফিসিয়ালি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বর্ধিত করেছি।
এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে বসন্তবরণ, সাংগাঠনিক সফর সহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নানা ব্যস্ততা ছিল। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিতে পারবে বলে আশা করছি।
এ ব্যাপারে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয় নি।
উল্লেখ্য, তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাজিয়া সুলতানা, এনামুল হক তানান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক ও উপ আইনবিষয়ক সম্পাদক সাফরিন সুরাইয়া।
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.