খান মোহাম্মদ সালেক, দুবাই থেকে ফিরে-
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্য নগরী দুবাই জুড়েই রয়েছে মনোরম সব পর্যটন কেন্দ্র। আর এসব পর্যটন কেন্দ্রে হাজারো মানুষের ভীড় জমে প্রতিদিন। আল খাওয়নিজ এলাকায় রয়েছে আরও একটি পর্যটন কেন্দ্র যার অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে কিছু কৃত্রিম দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়।
এই পর্যটন কেন্দ্রে সব বয়সী মানুষ এলেও এটি বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্রমণে আসা প্রেমিক যুগলদের পছন্দের জায়গা। এখানে রয়েছে দু’টি প্রমিজ ব্রিজ। সমুদ্রের তীরবর্তি কৃত্রিম হ্রদের ওপর এই ব্রীজকে ঘিরে প্রেমিক প্রেমিকরা এখানে এসে আড্ডা দেন, ভালবাসার অঙ্গীকার করেন এবং ভালবাসার অঙ্গীকারকে তালাবদ্ধ করে রাখেন এই ব্রিজে।
৩৫ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে স্থাপিত এই পর্যটন কেন্দ্রে ২০১৮ সালে প্রথম একটি প্রমিজ ব্রিজ তৈরি করা হয়। তখনই এই ব্রিজটি প্রেমিক যুগলদের প্রিয় হয়ে ওঠে। হাজারো প্রেমিক যুগলের তালায় ভরে যায় ব্রিজটি। এখানে হরেক রকমের তালা রয়েছে যার সবই প্রেমিক প্রেমিকাদের ভালবাসার চিহ্ন।
কেউ তালায় লিখে রাখেন প্রেমিক যুগলের নাম, কেউ ভালবাসার মানুষের নাম, কেউ বা ভালবাসার চিহ্ন এঁকে দেন এই তালায়। এই ব্রিজটি তালায় ভরে যাওয়ার পর এর পাশে তৈরি করা হয় আরও একটি প্রমিজ ব্রিজ।

সেই ব্রিজটিতেও এখন কোন জায়গা নেই। ভরে গেছে ভালবাসার তালায়। তবুও প্রেমিক প্রেমিকারা আসছেন এবং ভালবাসার অঙ্গীকার করে তালার সাথে তালা লাগিয়ে দিচ্ছেন।
সন্ধ্যা হতেই ব্রিজ দু’টিসহ পুরো এলাকা আলো ঝলমল হয়ে ওঠে।
এখানে প্রেমিক যুগল ছাড়াও বহু মানুষ ভীড় করেন এখানকার অপরূপ দৃশ্য দেখার জন্য। অনেকে পরিবার নিয়ে আসেন এখানে। অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করেন মনোরম দৃশ্য। প্রমিজ ব্রিজকে ঘিরে রয়েছে নানা আয়োজন। একদিকে একটি মে শিল্পিরা সঙ্গীত পরিবেশন করছেন, যন্ত্র সঙ্গীত বাজছে, আর তা উপভোগ করছেন দর্শণার্থীরা।
অনেকে আবার সঙ্গীতের তালে তালে নাচে মেতে উঠছেন। শিশুদের জন্য রয়েছে অনেক আকর্ষণীয় রাইড যেখানে শিশুরা খেলছে। প্রাচীন যুগের অনেক নিদর্শণও সাঁজিয়ে রাখা হয়েছে এখানে যা ভ্রমণ পিপাসু মানুষের আকর্ষণ বাড়াচ্ছে।
এখানকার কৃত্রিম হ্রদকে ঘিরে বেশ কিছু অভিজাত ও ব্যয়বহুল রেস্তোরা গড়ে উঠেছে। দেশ বিদেশের মুখরোচক খাবার পরিবেশন করা হয় এখানে। এসব রেস্তোরায় আমিরাতের মানুষকেই বেশী দেখা যায়। অন্যান্য দেশের মানুষও এসব রেস্তোরায় বসেন এবং তাদের সাদরে গ্রহণ করেন আমিরাতীরা।
অনেক ছোট ছোট রেস্তোরাও রয়েছে এখানে। কৃত্রিম হ্রদকে ঘিরে এই পর্যটন কেন্দ্রে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষ ঘুরে বেড়ান। কখনো নিরাপত্তা সংকটে ভোগেন না পর্যটকরা। (চলবে)