রাজিব রায়হান, জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শেখ রাসেল হল ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের মধ্যবর্তী দেওয়াল অপসারণ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় শহীদ রফিক-জব্বার হলের অর্ধশত রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের। এছাড়া শহীদ রফিক জব্বার হলের দুই শিক্ষার্থী গুরুতরসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
[caption id="attachment_15681" align="alignnone" width="225"]
গতকাল মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটা থেকে দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে রাত সাড়ে নয়টা থেকে দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এরপর রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, নিরাপত্তা শাখা এবং আশুলিয়া ও সাভার থানা পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
[caption id="attachment_15682" align="alignnone" width="225"]
সরাজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহীদ রফিক জব্বার হলের ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলার শেখ রাসেল হলের সম্মুখে অবস্থিত প্রায় অর্ধশত রুমের বেহাল দশা। রুমের জানালাগুলোর কাঁচ ভেঙে ফেলা হয়েছে, রুমের লাইট এবং টয়লেটের জানালাও বাদ যায়নি। পড়ার টেবিল, কাপড়-চোপড়, বিছানাসহ রুমের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল কাঁচের টুকরা। অন্যদিকে শেখ রাসেল হলেরও কয়েকটি রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
[caption id="attachment_15683" align="alignnone" width="225"]
এ বিষয়ে শহীদ রফিক জব্বার হলের ২৩২নং রুমে অবস্থানরত শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, 'ভাগ্য ভালো যে, আমি রুমে ছিলাম না। রুমে আসার পর দেখলাম আমার পড়ার টেবিল ও বিছানার উপর দিয়ে শুধু কাঁচ ও ইটের টুকরা পড়ে আছে। জানালার একটি কাচও ঠিক নেই। রুম ভাঙচুরের সময় রুমে থাকলে হয়তো আমাকে এখন হাসপাতালে থাকা লাগতো। আমরা সবাই এই অমানবিক কর্মকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে সম্পূর্ণ দোষ প্রশাসনের। তারা কোনো রকম পরিকল্পনা ছাড়া কি করে এভাবে হল তৈরি করতে পারে। একই সারিতে চারটি হল তৈরি করে রেখেছে। হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা।
শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহেদ রানা বলেন, সংঘর্ষের পূর্বে আমি শিক্ষার্থীদের বলেছিলাম এখানে কোনো চিত্রকর্ম আঁকা হবে না। তারা যাতে কোনো ধরনের সংঘর্ষে না যাই। যখন বিপক্ষ হল থেকে ইট পাটকেল ছড়া হলো তখন দুই হলের সংঘর্ষ শুরু হয়। আর স্বাভাবিকভাবেই গঠনগত কারণে আমরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
এ সময় ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আমি খবর পাওয়ার প্রক্টরিয়াল টিমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসি। মূলত দুই হলের মধ্যবর্তী দেওয়াল অপসারণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের উভয় হলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে শেখ রাসেল হল উচ্চ ভবন হওয়ায় তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শহীদ রফিক জব্বার হলের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা যায়।
এর আগে, দেয়াল অপসারণের দাবি হল প্রভোস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর সহ স্মারকলিপি জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি জানতে পেরে দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর চিত্রকর্ম আঁকার প্রস্তুতি নেয় শহীদ রফিক জব্বার হল। এটি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে দুই হলের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.