Site icon Daily Dhaka Press

ইবিতে ক্লাসরুম সংকট কেন্দ্র করে শিক্ষক লাঞ্চিত; আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) উন্নয়ন অধ্যয়ন (ডিএস) বিভাগের ক্লাসরুম সংকটের দাবিতে এবং সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালে শ্রেণীকক্ষে ঢুকে দায়িত্বরত শিক্ষককে লাঞ্চিতের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পের অংশ রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের সম্প্রসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। এসময় উপাচার্যের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগটি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ইংরেজি বিভাগের একটি রুমে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে যেয়ে সময়মতো ক্লাস, পরীক্ষা নিতে না পারায় সেশন জটের সম্মুখীন হয়। পরবর্তীতে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের কাজ প্রায় সমাপ্তির দিকে থাকায় প্রশাসনের বরাদ্দের আগেই দ্বিতীয় তলার কয়েকটি রুম তারা নিজেদের দখলে নেয়। আজ সকাল থেকেই একটি কক্ষে বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নন-ক্রেডিট কোর্সের পরীক্ষা চলছিল। এসময় প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা ভবনের কাজ পরিদর্শনে গেলে কাজ আংশিক বাকি থাকায় বিভাগের সবাইকে ১ ঘন্টার মধ্যে বের হয়ে অন্যান্য রুমের তালা খুলে দিতে বলেন।

এসময় পরীক্ষার ডিউটিরত শিক্ষককে লাঞ্চিতের অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে দুপুর ২ টা থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভাগের প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসে তোপের মুখে পড়েন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। এসময় শিক্ষার্থীদের “ক্লাসরুম সংকট কেনো? প্রশাসন জবাব চাই” “প্রশাসনের প্রহসন, মানি না মানবো না,” “আমার শিক্ষক লাঞ্ছিত কেনো? প্রশাসন জবাব চাই” সহ বিভিন্ন দাবী সংবলিত প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানে অবস্থান করতে দেখা যায়।

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী জেসিয়া বলেন, আমাদের পরীক্ষা শুরুর ঘন্টাখানেক পরেই উনারা রুমে ঢুকে ‘এই হাফিজ এইদিকে আসো, এই তালার চাবি কই পেয়েছো? তোমাকে ৭ বছর যাবৎ চিনি। তুমি কি করতে পারো করো। এক ঘন্টার মধ্যেই তালা খোলে দাও এবং রুম ফাঁকা করো’ – এভাবেই স্যারের সাথে কথা বলেন। আমাদের সামনে স্যারকে কেন এইভাবে অপমান করা হবে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট এর জবাব চাই।’

অপর শিক্ষার্থী ইয়াশ রোহান বলেন ‘আমাদের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইসলামিক স্টাডিজ পরীক্ষা চলছিল। এমন সময় ভিসি স্যারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক আমাদের ক্লাস রুমের দরজায় ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকে আমাদের সামনেই হলে দায়িত্বরত স্যারকে লাঞ্চিত করেন এবং এক ঘন্টার মধ্যেই রুম ছেড়ে দিতে হুমকি দেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগটির শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর ইসলাম কোন কিছু বলতে অপরগতা প্রকাশ করে বলেন, আমি মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। আমি এই বিষয়ে এখন কিছু বলতে চাচ্ছিনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের মেগা প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান আছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যেই আমাদের এই ভবনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তারপর ক্লাসরুমের কোনো সংকট থাকবে না। ক্লাসরুমের কাজ সম্পন্ন হলে কক্ষগুলো তো তারাই পাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আগামীকাল দুপুর ১২ টায় ডিন, বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে মিটিং ডেকেছি। তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এর সমাধান করা হবে। লাঞ্চনার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ঘটনাস্থলে আমি উপস্থিত ছিলাম। পরীক্ষা চলমান ছিল বিধায় দায়িত্বরত শিক্ষকের সাথে ক্লাসরুমের বাইরে কথা বলা করা হয়। এখানে শিক্ষকদের কোনপ্রকার লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেনি।

Exit mobile version