ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথম ধাপে জয় পেয়েছে মারিন লো পেনের কট্টর ডানপন্থি অভিবাসনবিরোধী দল ন্যাশনাল র্যালি ও তার মিত্ররা। রোববার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তাদের জোট ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়ে শীর্ষে রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ফ্রান্সের বামপন্থি জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট। তারা পেয়েছে ২৮ শতাংশ ভোট। আর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর উদার-মধ্যপন্থি এনসেম্বল জোট পেয়েছে ২০ শতাংশ ভোট।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বাধীন এই জোটে আছে তার দল রেনেসাঁ, ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, হরাইজন্স, অ কুমা ও প্রগ্রেসিভ ফেডারেশন।
এর আগে একাধিক সংস্থার বুথফেরত জরিপে দেখা গেছে, মারিন লো পেনের ন্যাশনাল র্যালি ও তার মিত্ররা ফ্রান্সের পার্লামেন্টের বেশিরভাগ আসনে প্রথম ধাপের ভোটে জয় পেয়েছে।
তবে আগামী রোববার (৭ জুলাই) দ্বিতীয় ধাপের ভোটে দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না, পেলে মারিন লো পেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী পদের দাবি করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।
বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছেন, মারিন লো পেনের দল দ্বিতীয় ধাপের ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে না পারলে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট দেখতে হবে ফরাসিদের। আর এতে আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে তারা।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে কোনও দলকে ফ্রান্সের পার্লামেন্টের ৫৭৭টির আসনের মধ্যে ২৮৯টিতে জয় পেতে হয়।
ফ্রান্সের পার্লামেন্টের প্রথম ধাপের নির্বাচনের ফলের উল্লেখযোগ্য দিক হলো, ন্যাশনাল র্যালি এবার প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ ভোট পেয়েছে। এর আগে ২০২২ সালে তারা পেয়েছিল ৪২ লাখ ভোট। অর্থাৎ প্রথম ধাপে গতবারের চেয়ে তিন গুণ বেশি ভোট পেয়েছে অভিবাসনবিরোধী এই দল।
জুনের শুরুতে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর উদার-মধ্যপন্থি জোটকে পরাজিত করেছিল মারিন লো পেনের ন্যাশনাল র্যালি। এরপরই হঠাৎ আগাম নির্বাচনের ডাক দিয়ে ফ্রান্সের জনগণের পাশাপাশি মিত্রদের চমকে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
আগাম এই পার্লামেন্ট নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যদি ন্যাশনাল র্যালি জয়ী হয় এবং মারিন লো পেন প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে প্রেসিডেন্টের মেয়াদের বাকি তিন বছর ম্যাক্রোঁকে এই বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে অস্বস্তিকর অংশীদারত্বের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করতে হবে।
প্রথম ধাপের সংসদীয় নির্বাচনে জয়ের খবর পেয়ে উল্লসিত হয়ে পড়েন ন্যাশনাল র্যালির কর্মী-সমর্থকরা। রাজপথে নেমে তারা বিজয় উদযাপন করেন। তবে রবিবারের দ্বিতীয় ধাপের ভোটের দিকেই চোখ দলটির নেতা মারিন লো পেনের।
উচ্ছ্বসিত ভোটারদের উদ্দেশে তিনি তাই বলেন, “গণতন্ত্র কথা বলেছে। ভোট দিয়ে ন্যাশনাল র্যালি ও এর মিত্রদের প্রথম স্থানে রেখেছে ফরাসিরা। তারা বাস্তবিক অর্থে ম্যাক্রোঁর শিবিরকে নির্মূল করেছে।
“তবে এখনও কিছুই অর্জন হয়নি। দ্বিতীয় ধাপের ভোট চূড়ান্ত করবে সবকিছু।”