আগামী ৫ আগস্ট ‘ববিতা দিবস’। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ৫ আগস্টকে ‘ববিতা দিবস’ ঘোষণা সকরা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতাকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শুধু ববিতা অভিনীত সিনেমাই প্রদর্শিত হয়েছিলো।
তাকে দেওয়া হয়েছিলো আজীবন সম্মাননা। টেক্সাসের রিচার্ডসন সিটির মেয়র বব ডুবের হাত থেকে ববিতা এ সম্মাননা গ্রহণ করেছিলেন। পাশাপাশি সেই সময়ই উৎসবে তার সম্মানে ৫ আগস্টকে ‘ববিতা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিলো। দিনটি ঘোষণা করেছিলেন ডালাসের সিটি মেয়র। প্রতি বছর ডালাসে দিনটি ‘ববিতা দিবস’ হিসাবে উদযাপিত হবে।
এদিকে আজ ববিতার জন্মদিন। জন্মদিনের আগেই এবার গত ২৩ জুলাই কানাডা চলে যাবার কথা ছিলো ববিতার। কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হবার কারণে ববিতা এবার নির্ধারিত সময়ে কানাডা যেতে পারেননি। হাসপাতালে দুদিন থাকতে হয়েছে তাকে। তাই এবার ছেলে অনিকের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করা হচ্ছেনা। তবে ববিতা জানান শরীরটা একটু ভালো অনুভব করলেই তিনি কানাডার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।
ববিতা বলেন,‘ জন্মদিনতো আসলে সেভাবে উদযাপন করা হয়না। এবার অনিক বলেছিলো জন্মদিনে আমাকে নানান ধরনের সারপ্রাইজ দিবে। কিন্তু তা আর হয়ে উঠলোনা। তাই ঢাকায় নিজের বাসাতেই জন্মদিনের পুরোটা প্রহর কাটবে। আমার বড় বোন ছোট বোন’সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাতো আছেই। সবার কাছে দোয়া চাই যেন আল্লাহ সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন।
আর গত বছর ডালাসে ববিতা দিবসের যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে আমাকে এবং আমার প্রিয় বাংলাদেশকে যে সম্মাননা জানানো হলো তাতে সত্যিই আমি ভীষণ গর্বিত, ভীষণ আনন্দিত। এ সম্মান শুধু আমাকেই নয়, এ সম্মান বাংলাদেশকেও প্রদর্শন করা হয়েছে। সত্যি আমি কোনোদিন কখনো কল্পনা করিনি জীবনে এমন মুহূর্ত আসবে। জীবনে এমনই কিছু মুহূর্ত আসে যা জীবনের জন্য আশীর্বাদ হয়েই আসে। এটা সত্যি এমন প্রাপ্তিও যে জীবনে অপেক্ষা করছে তাও জানার বা বুঝার মধ্যে ছিল না। এই সম্মান আমার জীবনে পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছে। জীবন যেন আরও অর্থবহ হয়ে উঠেছে।’ ববিতা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা।
বাংলাদেশের পতাকা যার হাত ধরে প্রথম বিশ্বের কোন চলচ্চিত্র উৎসবে উড়েছে তিনি সেইজন। বহুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কবারপ্রাপ্ত নায়িকা ববিতা পেয়েছেন ‘আজীবন সম্মাননা’ও। নায়িকা হিসেবে ববিতা প্রায় দেড় শত সিনেমাতে অভিনয় করেছেন।
যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘সুন্দরী’, ‘এক মুঠোভাত’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বসুন্ধরা’, ‘সোহাগ’, ‘ফকির মজনুশাহ’, ‘ওয়াদা’, ‘লাঠিয়াল’, ‘কথা দিলাম’, ‘নিশান’, ‘এতিম’, ‘লাইলী মজনু’, ‘দূরদেশ’, ‘মিস লংকা’, ‘ফুলশয্যা’, ‘বীরাঙ্গণা সখিনা’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘বেহুলা লক্ষিন্দর’, ‘ফুলশয্যা’ ইত্যাদি উল্লেখ্য।
অস্কার বিজয়ী চললচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমাতে অভিনয় করে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন।