প্রসেনজিত চৌধুরী: অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে আমলাতান্ত্রিক চর্চা ও দীর্ঘসূত্রতা থেকে মুক্তিসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষকসমাজ।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার’ শীর্ষক ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
‘শিক্ষা-ভাবনা-আমাদের প্রস্তাব’ এবং ‘প্রশাসন ও ক্ষমতা কাঠামোর পুনর্বিন্যাস’ নামে দুই পর্বের আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
মতবিনিময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দক্ষ মানবসম্পদ ও সময়োপযোগী নেতৃত্ব সৃষ্টিতে সক্ষম একটি গণতান্ত্রিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাকাঠামো পুনর্বিন্যাসে একটি প্রায়োগিক রূপরেখা সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধে নিপীড়ন-নির্যাতন-বৈষম্যবিরোধী সেল গঠন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘কোড অব কনডাক্ট’ তৈরি, ভর্তি পরীক্ষা শিক্ষার্থীবান্ধব ও আধুনিক করা, শিক্ষার্থীদের আবাসন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রম জোরদার, বৃত্তি, ঋণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ, শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও শিক্ষাদান পদ্ধতির আধুনিকায়ন, শিক্ষকদের জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত পরিকল্পনা ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষক অনুপাত বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ২০:১। বাস্তব কারণে মানা না গেলেও ৪০:১ বেশি করা যাবে না। প্রয়োজনে একটি বিভাগে একটি ফোর্সের একাধিক সেকশন-ইউনিট থাকতে পারে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এই খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন এবং এ বিষয়ে মতবিনিময় সভা আয়োজন করায় শিক্ষকসমাজকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় সবার প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে জ্ঞান নির্ভর ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে অংশীজনদের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনায় আরও অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা ও আবদুল কাদের।
শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খোরশেদ আলম এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহমান মৈশান।