নারায়ণগঞ্জ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকায় পোশাককর্মী বদিউজ্জামানকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নিহত বদিউজ্জামানের স্ত্রী আদুরী খাতুন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন।
নিহত বদিউজ্জামান রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মাঝপাড়া এলাকার মো. আজগর আলীর ছেলে। সে নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এক জোট হয়ে পিস্তল, শটগান, ককটেল, লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার এলাকায় যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেন। শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও শামীম ওসমানের নির্দেশে আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলি করেন।
বাদীর ফুফাতো দেবর স্বাধীন মিয়া ও স্বামী বদিউজ্জামান শহরের হাজীগঞ্জ এলাকার বাড়িতে ফেরার পথে চাষাঢ়া গোল চত্বর এলাকায় এলে আসামিরা দেশি অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে তাদের পেটান। এতে তার স্বামী বদিউজ্জামান লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে থাকা স্বাধীন মিয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বদিউজ্জামানকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয় যে, গুলিতে বদিউজ্জামান নিহত হওয়ার বিষয়টি জানাজানির পর আসামিরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাপ দেন। বাদীর দেবর স্বাধীন মিয়া আতঙ্কিত হয়ে লাশ গ্রামের বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া থানার মাঝপাড়ায় নিয়ে যান। সেখানে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।