Site icon Daily Dhaka Press

পোশাক খাতে ‘সুখবর’

টানা কয়েক মাস ধরে দেশে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এর ধাক্কা লেগেছে তৈরি পোশাক শিল্পেও। বিদেশি ক্রেতারা তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল করতে পারেন-এমন আশঙ্কা করছিলেন এই শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তরা। তবে শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল ‘সুখবর’। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ থেকে ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করেনি বেশির ভাগ আন্তর্জাতিক ক্রেতা। কোনো ব্র্যান্ড বা কোম্পানি কারখানা মালিকদের জরিমানাও করেনি। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস রিসোর্স সেন্টারের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

২০ ক্রেতা ও কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এসব ক্রেতা ও কোম্পানির মধ্যে ক্রয়াদেশ স্থানান্তরের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ১২টি কোম্পানি। ওই সময়ে কোনো ব্র্যান্ড বা কোম্পানি জরিমানাও করেনি কারখানা মালিকদের। তবে, স্থানান্তরসংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়নি একটি কোম্পানি। বাকি সাতটি ব্র্যান্ড ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।

প্রতিবেদনে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, আন্দোলনের সময় অন্তত সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এ খাতে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেরিতে পণ্য ডেলিভারি, পরিবহন খরচ এবং ঝুঁকি বৃদ্ধি, সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন, অতিরিক্ত সময় ধরে গুদামজাত। পণ্য সরবরাহের সময় বেড়ে যাওয়ায় ক্রয়াদেশ বাতিলের ঝুঁকিতে পড়েন কারখানা মালিকরা। সেই ঝুঁকি এড়াতে শ্রমিকরা বাড়তি কাজ করেন এবং তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে আলাদা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা ও পরিবহনের ক্ষেত্রে বাড়তি খরচ, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার মজুরির দায় মেটানোও ছিল মালিকদের জন্য চ্যালেঞ্জের।

এদিকে আন্দোলনের সময় কোনো আদেশ বাতিল-স্থানান্তর হয়নি বা জরিমানা করাও হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি বিজিএমইএ। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর পোশাক খাতে সাম্প্রতিক যে অস্থিরতা দেখা দেয় তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পোশাক মালিকরা। তারা জানিয়েছেন, কিছু ক্রেতা ইতোমধ্যে ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করেছে।

দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার অন্যতম নিয়ামক পোশাক খাতে স্বস্তি ফেরাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার ও মালিকপক্ষ। ক্ষতি পোষাতে সরকারের কাছে এক বছরের জন্য সহজ শর্তে ঋণ চেয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সরকারের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে সহায়তার আশ্বাস। শ্রমিকরা যেসব দাবিতে আন্দোলন করছিলেন সেগুলোও মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ। এতে পোশাক খাতে স্বস্তির আভাস ফেরার প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Exit mobile version