সিরিয়ার নতুন শাসকদের অনুগত বাহিনী পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে।
এটি দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা, যা গত ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের হাতে আসাদের পতন ও ইসলামপন্থী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে প্রথমবারের মতো সংঘটিত হলো।
ব্রিটেনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সংঘর্ষে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
লাতাকিয়া ও টারটুসে কারফিউ ঘোষণা
সংঘর্ষের পর উপকূলীয় শহর লাতাকিয়া ও টারটুসে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সংঘর্ষ শুরু হয় যখন সরকারি বাহিনী লাতাকিয়ায় একটি নিরাপত্তা অভিযানের সময় হামলার শিকার হয়।
সরকারি বাহিনী নতুন সেনা পাঠিয়েছে, এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে তীব্র গুলিবর্ষণের চিত্র দেখা গেছে। এলাকাটি মূলত আলাওয়ি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রভূমি ও আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
হতাহতের সংখ্যা ও সংঘর্ষের বিস্তার
হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, এবং বিবিসি এ তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। সিরিয়াভিত্তিক সংবাদ সংস্থা Step জানিয়েছে, সরকার-সমর্থিত বাহিনী প্রায় ৭০ জন সাবেক আসাদপন্থী যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং ২৫ জনের বেশি বন্দি করেছে। এছাড়া, হোমস ও আলেপ্পোতেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সরকারের কড়া হুঁশিয়ারি
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আবদুল ঘানি লাতাকিয়ায় আসাদপন্থীদের উদ্দেশে সরকারি গণমাধ্যমে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন: "হাজারো মানুষ অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছে, কিন্তু কেউ কেউ খুনি ও অপরাধীদের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের জন্য একটাই পথ খোলা—অস্ত্র ফেলে দেওয়া, নতুবা নিশ্চিত মৃত্যু।"
নতুন সরকারের জন্য নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ
এ সংঘর্ষ অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য বড় ধরনের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আলাওয়ি সম্প্রদায়ের কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, আসাদের পতনের পর থেকে হোমস ও লাতাকিয়ার গ্রামীণ অঞ্চলে তাদের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানো হচ্ছে। দক্ষিণ সিরিয়াতেও দ্রুজ যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা নতুন সরকারের জন্য আরও একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি
সপ্তাহের শুরুতে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈশ্বিক রাসায়নিক অস্ত্র পর্যবেক্ষক সংস্থাকে জানিয়েছেন যে, নতুন সরকার আসাদের আমলে উৎপাদিত সব রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আসাদ সরকার ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধ চলাকালে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেছিল, তবে অধিকারকর্মীরা বলছেন, আসাদের বাহিনী ডজনখানেক রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে।
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.