ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) কাছাকাছি পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের এলাকার বাসিন্দাদের খাদ্য মজুত করার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলার পর দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা চলার মধ্যে আজ শুক্রবার এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর এএফপির।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই পক্ষের মধ্যে টানা অষ্টম রাতের মতো গোলাগুলি হয়েছে। উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে দুই দেশ।
শুক্রবার (০২ মে) স্থানীয় প্রাদেশিক পরিষদে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ার উল হক বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন ১৩টি নির্বাচনী এলাকার জন্য দুই মাসের খাদ্যসরবরাহ মজুত করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আঞ্চলিক সরকার ওই ১৩টি নির্বাচনী এলাকার জন্য ‘খাদ্য, ওষুধ এবং অন্য মৌলিক চাহিদাগুলোর’ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১০০ কোটি রুপির (৩৫ লাখ মার্কিন ডলার) একটি জরুরি তহবিল গঠন করেছে।
নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকাগুলোর সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন যন্ত্রপাতিও মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান আনোয়ার উল হক।
ভারতশাসিত কাশ্মীরে হামলার পর যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মঙ্গলবার তার দেশের সেনাবাহিনীকে হামলার জবাব দেওয়ার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন।
পেহেলগামের হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। তারা বলছে, ভারত একটি সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে বলে তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য খবর আছে। যেকোনো হামলার জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার (০১ মে) পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এ মহড়ায় গোলাবর্ষণের অনুশীলনসহ যুদ্ধপ্রস্তুতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা এবং সৈন্যরা এ মহড়ায় অংশ নেন। বাহিনীর হাতে থাকা উন্নত যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৌশলগত দক্ষতা প্রদর্শন করা হয় সেখানে।
সামরিক উত্তেজনার আশঙ্কায় গত ২৪ এপ্রিল পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের কর্তৃপক্ষ ১০ দিনের জন্য এক হাজারেরও বেশি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই কাশ্মীরকে পূর্ণাঙ্গভাবে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর থেকে হিমালয়ের অঞ্চলটি নিয়ে একাধিকবার যুদ্ধে জড়িয়েছে দুই দেশ।
ডেইলি ঢাকা প্রেস / ০২ মে ২০২৫/ জেডআরসি
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.