Site icon Daily Dhaka Press

ভারতকে জবাব দেওয়ার অনুমতি পেল পাকিস্তান সেনাবাহিনী

ডিডিপি ডেস্ক. পাল্টাপাল্টি হামলার মাধ্যমে যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত-পাকিস্তান। দেশটি পাকিস্তানের অন্তত ৯টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ হামলার পর ভারতকে জবাব দেওয়ার অনুমতি পেয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।

বুধবার (০৭ মে) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান ও ড্রোন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বুধবার জরুরি বৈঠকে বসে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি)। বৈঠকে ভারতের হামলাকে উসকানিমূলক যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং বলা হয়, এটি পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন।

এনএসসি জানায়, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে মসজিদ ও বাসাবাড়িসহ বেসামরিক এলাকায় হামলা চালিয়ে নারী, শিশু ও নিরীহ নাগরিকদের হত্যা করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ।

কমিটি আরও জানিয়েছে, এই ধরনের হামলার মাধ্যমে ভারতের উদ্দেশ্য ছিল অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি করা, এবং এই সংঘাতমূলক পরিস্থিতির পূর্ণ দায়ভার ভারতের ওপরই বর্তায়।

এনএসসি আরও জানিয়েছে, জাতিসংঘের সনদের অনুচ্ছেদ ৫১ অনুসারে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগের বিষয়ে পূর্ণ অধিকার রয়েছে। এ লক্ষ্যে, সশস্ত্র বাহিনীকে প্রয়োজনীয় প্রতিউত্তরমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্ণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

কমিটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার জন্য প্রশংসা করে এবং দেশের প্রতিরক্ষায় তাদের অবদানকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে।

এনএসসির বৈঠকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ভারতের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে বলা হয়, পাকিস্তান শান্তির পক্ষে—কিন্তু সম্মান ও মর্যাদার ভিত্তিতে। দেশের জনগণ ও ভূখণ্ডের নিরাপত্তায় কোনো আপস করা হবে না, এবং পাকিস্তান কখনোই কোনো আগ্রাসন মেনে নেবে না।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত পাকিস্তানের ৬টি এলাকায় ২৪টি বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্রে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা পাঞ্জাব প্রদেশের ভাওয়ালপুরের আহমেদপুর শারকিয়া, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শকরগড় এবং পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের কোটলি ও মুজাফফরাবাদে হয়।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে দুই-তিন বছর বয়সী একটি শিশু মেয়ে, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৯ নারী ও ২৮ পুরুষ।

মুজাফফরাবাদের কাছে বিলাল মসজিদে চালানো হামলায় তিনজন নিহত হন, আহত হন এক মেয়ে ও এক ছেলে। কোটলির আব্বাস মসজিদে হামলায় নিহত হন ১৬ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ১৮ বছর বয়সী এক ছেলে, আহত হন এক মা ও তার মেয়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের হামলার পর পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ।

এদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি যুদ্ধ ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। আইএসপিআরের ডিজি বলেন, শত্রুর আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরক্ষামূলকভাবে আমরা ৩টি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ বিমান এবং একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছি।

তিনি জানান, জম্মু, আখনুর ও শ্রীনগরের সাধারণ এলাকাগুলোতে একটি করে বিমান এবং অবন্তীপুরে দুটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছে।

ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সীমান্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত ১০ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন। পরমাণু শক্তিধর দু-দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান এই উত্তেজনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

Exit mobile version