জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের জন্য স্বাস্থ্য কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রাথমিকভাবে দেশের ৩৬টি জেলার ৪ হাজার ৫৫১ জন ‘জুলাই যোদ্ধা’ এই স্বাস্থ্য কার্ড পাচ্ছেন। পর্যায়ক্রমে বাকি জেলাগুলোর আহতরাও এই সুবিধার আওতায় আসবেন।
দ্রুততার সঙ্গে এই স্বাস্থ্য কার্ডগুলো বিতরণের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলার জন্য প্রস্তুতকৃত কার্ডগুলো সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনদের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
গেল ১ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক চিঠিতে প্রতিটি জেলার সিভিল সার্জনকে একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি মনোনয়ন দিতে বলা হয়েছে। এই প্রতিনিধিরা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে কার্ডগুলো বুঝে নিয়ে নিজ নিজ জেলার আহত যোদ্ধাদের কাছে সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছে দেবেন।
প্রথম ধাপে যে ৩৬টি জেলার জুলাই যোদ্ধারা স্বাস্থ্য কার্ড পাচ্ছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রয়েছেন নরসিংদীর ৪৩০ জন, ঢাকার ৩৭৭ জন, কুষ্টিয়ার ৪৩২ জন, গাজীপুরের ৩৭৫ জন, টাঙ্গাইলের ২৫৫ জন, বগুড়ার ২৯৬ জন এবং ময়মনসিংহের ১৭৯ জন।
এ ছাড়া কিশোগঞ্জের ১১২ জন, কুমিল্লার ১০৮ জন, চট্টগ্রামের ১৬৮ জন, ফেনীর ১০৬ জন, বরিশালের ৮২ জন, দিনাজপুরের ৬০ জন, সিলেটের ৮৬ জন, সিরাজগঞ্জের ১৪৩ জন, গাইবান্ধার ৩৯ জন, লক্ষ্মীপুরের ১৬৬ জন, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার ১৭ জন, নীলফামারীর ৩৪ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ২২১ জন, কুড়িগ্রামের ১৫ জন, নোয়াখালীর ১০১ জন, ঝিনাইদহের ২৭ জন, নাটোরের ৪ জন, নারায়ণগঞ্জের ১০০ জন, পিরোজপুরের ১৩ জন, জয়পুরহাটের ৬ জন, রংপুরের ১১২ জন, ভোলার ৭৬ জন, চাঁদপুরের ১১৮ জন, যশোরের ১৩ জন, নওগাঁয়ের ৫ জন, মাদারীপুরের ৮১ জন এবং বরগুনার ৯৫ জন এই কার্ডের সুবিধাভোগী হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ জানিয়েছে, এই স্বাস্থ্য কার্ডের মাধ্যমে জুলাই যোদ্ধারা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে অথবা বিশেষ ছাড়ে গ্রহণ করতে পারবেন। এই উদ্যোগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই হেলথ কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। সে সময় তিনি গণঅভ্যুত্থানের দুই যোদ্ধা, নরসিংদী ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী ইফাত হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমুর হাতে প্রতীকী স্বাস্থ্য কার্ড তুলে দেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নিশ্চিত করেছেন, এই হেলথ কার্ডের মেয়াদ নির্দিষ্ট নয়। তিনি বলেন, এই হেলথ কার্ড থাকার অর্থ হলো এক বছর পরে হোক, দু’বছর পরে হোক যেকোনো সময় দেশের যেকোনো সরকারি হাসপাতালে কার্ডধারীরা চিকিৎসা পাবেন। এই কার্ড সবসময়ই থাকবে। এটি জুলাই যোদ্ধাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.