নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত ‘গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন’-এর কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার একটি চিংড়ি ঘেরে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চিংড়ি জোনখ্যাত রামপুর মৌজায় অবস্থিত প্রায় ৩০০ একর আয়তনের এই খামারে হামলা চালায় ৭-৮ জনের একটি অস্ত্রধারী ডাকাত দল।
ডাকাতির সময় ঘের এলাকায় দায়িত্বে থাকা চারজন কর্মচারীকে মারধর করে আহত করে ডাকাতরা। আহতরা হলেন—মসজিদের ইমাম মোজাম্মেল হক, কর্মচারী নাসির উদ্দিন, মো. মিজান ও মো. মোজাম্মেল।
ঘটনার বিষয়ে ফাউন্ডেশনের খামার ব্যবস্থাপক উৎপল কান্তি চৌধুরী বলেন: ‘রাত আড়াইটার দিকে ৭-৮ জন অস্ত্রধারী ডাকাত অফিস এলাকায় ঢুকে পড়ে। তাঁদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ও কিরিচ ছিল। সবাইকে জিম্মি করে প্রায় ৫০ হাজার টাকার বাগদা, কোরাল, বাটা মাছ লুট করে নিয়ে যায়। মোবাইল ও টর্চলাইটও নিয়ে গেছে।’
খামার ব্যবস্থাপক উৎপল জানান, এটি প্রথমবারের ডাকাতি নয়। এর আগে ২০২১ সালের ৫ জুলাই এবং ২০২৪ সালের ৩ জুন—দুই দফায় সন্ত্রাসীরা ঘেরটি জোরপূর্বক দখলে নেয়।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সন্ত্রাসীরা এলাকা ছেড়ে গেলে ফাউন্ডেশন পুনরায় চাষাবাদ শুরু করে।
তিনি জানান, ‘২০২১ সালে সন্ত্রাসী দখলের ঘটনায় চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলা এখনো চলমান রয়েছে।’
ঘটনার বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খামার কর্তৃপক্ষের মৌখিক অভিযোগ পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ড. ইউনূসের গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের অন্যতম সমাজভিত্তিক কৃষি-উদ্যোগ হিসেবে পরিচিত। ঘেরটি দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মহলের নজরে রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো ইঙ্গিত দেয়।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এমন ডাকাতির ঘটনা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি নয়, বরং বাংলাদেশের বেসরকারি কৃষি উদ্যোগ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.