Site icon Daily Dhaka Press

পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইগারদের দাপুটে জয়

পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় ৭ উইকেটের এক দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে টাইগাররা সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া ২-১ ব্যবধানের সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষেও শুভসূচনা করল বাংলাদেশ।

টস ও পাকিস্তান ইনিংস: শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়
টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। এই সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করেন বাংলাদেশের বোলাররা। শুরু থেকেই তারা পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামান। পাওয়ার প্লেতেই ৪১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান, যা থেকে তারা আর বেরিয়ে আসতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয়ে যায়। ফখর জামান দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন। এছাড়া আব্বাস আফ্রিদি ২২ ও খুশদিল শাহ ১৭ রান করেন।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান নেন ২টি উইকেট।

পাকিস্তানের উইকেট পতন:
১. ৫ ওভারে ১৮/১: সাইম আইয়ুব (৬) – তাসকিন আহমেদের বলে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এর আগে তাসকিন ফখর জামানের একটি সহজ ক্যাচ মিস করেন।

২. ৩ ওভারে ৩২/২: মোহাম্মদ হারিস (৪) – মেহেদী হাসানের বলে শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন। এর আগের পাঁচ বলে তিনি তিনটি চার মেরেছিলেন।

৩. ৫ ওভারে ৪০/৩: সালমান আগা (৩) – পাকিস্তান অধিনায়ক লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন তানজিম হাসান সাকিবের বলে।

৪. ৬ ওভারে ৪১/৪: হাসান নওয়াজ (০) – পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন।

৫. ৮ ওভারে ৪৬/৫: মোহাম্মদ নওয়াজ (৩) – মোহাম্মদ নওয়াজ ফখরের শটে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউট হন।

৬. ১২ ওভারে ৭০/৬: ফখর জামান (৪৪) – খুশদিল শাহের সঙ্গে ২৪ রানের সর্বোচ্চ জুটি গড়ে বিদায় নেন। তাসকিন আহমেদের থ্রোতে লিটন দাস তাকে রান আউট করেন। ৩৪ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে তিনি ৪৪ রান করেন।

৭. ১৭ ওভারে ১০৩/৭: খুশদিল শাহ (১৭) – মোস্তাফিজুর রহমানের বলে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন। এর আগে আব্বাস আফ্রিদি রিশাদকে একটি ছক্কা মেরে দলের স্কোর একশ পার করেন।

৮. ১৯.১ ওভারে ১০৮/৮: ফাহিম আশরাফ (৫) – তাসকিন আহমেদের বলে মেহেদী হাসানের হাতে ক্যাচ দেন।

৯. ১৯.২ ওভারে ১০৮/৯: সালমান মির্জা (০) – রান আউট হন। অভিষেকে ডাক মারলেন তিনি।

১০. ১৯.৩ ওভারে ১১০/১০: আব্বাস আফ্রিদি (২২) – লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে অলআউট হন।

বাংলাদেশের সহজ জয়
১১২ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ শুরুতেই কিছুটা বিপদে পড়লেও, পরবর্তীতে তা কাটিয়ে উঠে দাপুটে জয় নিশ্চিত করে।

বাংলাদেশের উইকেট পতন:
১. ১.৪ ওভারে ২/১: তানজিদ হাসান (১) – সালমান মির্জার বলে মিড অনে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দেন।

২. ২.২ ওভারে ৭/২: লিটন দাস (১) – সালমান মির্জার বলে খুশদিল শাহের দুর্দান্ত ক্যাচে স্লিপে ধরা পড়েন। অভিষেকে মির্জার এটি দ্বিতীয় উইকেট।

৩. ১২.৩ ওভারে ৮০/৩: তাওহীদ হৃদয় (৩৬) – আব্বাস আফ্রিদির বলে বোল্ড হন। ৩৭ বলে ২ চার ও ২ ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংস। পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয়ের ৭৩ রানের জুটি ভেঙে যায়।

তাওহীদ হৃদয় ও পারভেজ হোসেন ইমনের জুটিতে বাংলাদেশ পাওয়ার প্লের মধ্যেই ৫০ রান পার করে। মাত্র ৭ রানে ২ উইকেট হারানোর পর এই জুটি দলের হাল ধরেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৩ উইকেট হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

স্কোয়াড ও প্রত্যাশা
এই সিরিজটি উভয় দলের জন্য আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিজেদের সেরা একাদশ তৈরি করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পাকিস্তান একাদশ: ফখর জামান, সাইম আইয়ুব, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটরক্ষক), হাসান নওয়াজ, সালমান আগা (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নওয়াজ, খুশদিল শাহ, ফাহিম আশরাফ, আব্বাস আফ্রিদি, সালমান মির্জা, আবরার আহমেদ।

বাংলাদেশ একাদশ: পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকের আলী, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।

গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশ দল আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। সাকিব মাহেদীর দুর্দান্ত ফর্ম, বিশেষ করে পাওয়ারপ্লেতে উইকেট শিকার, ছিল চোখে পড়ার মতো। অধিনায়ক লিটন দাসও রান ফর্মে ফিরেছেন।

অন্যদিকে, ইনজুরির কারণে শাদাব খান এবং হারিস রউফকে ছাড়াই খেলতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। তাদের নতুন মুখরা পিএসএল-এ ভালো পারফর্ম করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেমন করে, সেটাই দেখার বিষয়।

বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের ২২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ১৯টিতেই জয়ের রেকর্ড থাকলেও, আজকের জয় টাইগারদের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

Exit mobile version