Site icon Daily Dhaka Press

বিশ্ব ফুটবল: শীর্ষ ১০ গোলদাতার ঈর্ষণীয় তালিকায় যারা

জাতীয় দলের হয়ে খেলা, ভালো করা এবং সর্বশেষ গোল করা যেকোনো ফুটবলারের স্বপ্ন। কেউ কেউ আছেন যারা স্বপ্নটিকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। এমনকি জাতীয় দলের হয়ে গোল করাকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন।

তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, যিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা। রোনালদো ছাড়াও লিওনেল মেসি, আলী দাইয়ি, সুনীল ছেত্রী, রোমেলু লুকাকু, মোখতার দাহারি, ফেরেঙ্কে পুসকাস, গডফ্রে চিতালু, নেইমার, হুসেইন সাঈদ ও কুনিশিগে কামামোতো- এই ফুটবলারদের গোলসংখ্যা বিশ্ব ফুটবলে এক ঐতিহাসিক চিহ্ন রেখেছে। তাদের এই অর্জন ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এক অনুপ্রেরণা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে; যা ভবিষ্যতে হয়তো অন্যরা পার করবে না বা পার করতে পারবে না।

বিশ্ব ফুটবলে শীর্ষ ১০ গোলদাতার ঈর্ষণীয় তালিকায় সবার আগে আসে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোল করা রোনালদো এখনো গোল করে চলেছেন। ‘সিআর সেভেন’–এর ঠিক পেছনেই আছেন সর্বকালের আরেক সেরা তারকা লিওনেল মেসি।

একনজরে দেখে নেওয়া যাক আরো কারা আছেন তালিকায়-

১. ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: চার বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে গোল করায় সবার উপরে অবস্থান করছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এখন পর্যন্ত ২২১ ম্যাচে ১৩৮ গোল করেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল করায় এই মুহূর্তে অনেকটাই ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন রোনালদো।

পর্তুগিজ মহাতারকা এখনো ফুটবল ছাড়েননি। সব ঠিক থাকলে ২০২৬ বিশ্বকাপেও হয়তো দেখা যাবে তাকে। ফলে তার গোলসংখ্যা সামনের দিনগুলো নিশ্চিতভাবে আরো সমৃদ্ধ হতে যাচ্ছে।

২. লিওনেল মেসি: ১৯৩ ম্যাচে ১১২ গোল করে দুই নম্বরে আছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকার শীর্ষের সম্ভাবনা অনেকটাই কম। কারণ, তার হাতে সম্ভাব্য যে সময় আছে, রেকর্ড ভাঙার মতো ম্যাচ হয়তো পাবেনই না। আর নাটকীয় কিছু না ঘটলে মেসি হয়তো ২০২৬ বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতি টানবেন। বিশ্বকাপসহ সম্ভাব্য ম্যাচগুলো বিবেচনায় নিলে মেসির পক্ষে রোনালদোর রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা নেইও বলা যায়।

৩. আলী দাইয়ি: আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোল করার ক্ষেত্রে মেসি–রোনালদোর পরের নামটি হয়তো অনেকের জানা। রোনালদোর কাছে সিংহাসন হারানোর আগে লম্বা সময় পর্যন্ত ইরানি ফুটবলার আলী দাইয়িই ছিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলদাতা। ইরানের হয়ে ১৯৯৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খেলা দাইয়ি ১৪৮ ম্যাচে করেছিলেন ১০৮ গোল। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সেই রেকর্ড রোনালদোর কাছে হাতছাড়া করেন তিনি।

৪. সুনীল ছেত্রী: এই তালিকার চতুর্থ নম্বরে থাকা নামটি বেশ চমকপ্রদ। লম্বা সময় ধরে ভারতীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সুনীল ছেত্রী— তিনিই এ স্থানটি দখল করেছেন। ১৫৫ ম্যাচে ছেত্রী গোল করেছেন ৯৫টি। মাঝে অবসর নিয়ে আবার ফিরেও এসেছেন। এখন তার সামনে সুযোগ আছে ১০০ গোলের মাইলফলক পূরণের। ছেত্রী এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন কিনা, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

৫. রোমেলু লুকাকু ও মোখতার দাহারি: সর্বোচ্চ গোলের পঞ্চম স্থানে যৌথভাবে আছেন বেলজিয়ান তারকা রোমেলু লুকাকু এবং মালয়েশিয়ার ফরোয়ার্ড মোখতার দাহারি। দুজনেই ৮৯টি করে গোল করেছেন। তবে লুকাকুর চেয়ে দাহারি বেশি ম্যাচ খেলেছেন।

লুকাকুর যেখানে ১২৪ ম্যাচ লেগেছে, দাহারির লেগেছে ১৪২ ম্যাচ। পাশাপাশি লুকাকু এখনো খেলে চলেছেন, অন্যদিকে ১৯৯১ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন দাহারি। লুকাকুর এখনো সুযোগ আছে দাহারিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।

৬. আলী মাবখুত ও রবার্ট লেভানডফস্কি: ষষ্ঠ স্থানেও আছেন যৌথভাবে দুজন। যেখানে আরব আমিরাতের আলী মাবখুত কম পরিচিত নাম হলেও অন্য নামটি কিন্তু বিখ্যাত। মাবখুতের মতোই বার্সেলোনার পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি করেছেন ৮৫ গোল।

তবে দুজনই এখন ফুটবলে সক্রিয়। ফলে এই তালিকায় দুজনেরই আরও ওপরে ওঠার সুযোগ আছে।

৭. ফেরেঙ্কে পুসকাস: ৮৪ গোল করা হাঙ্গেরিয়ান কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাস তালিকার সাত নম্বরে থাকলেও একদিক থেকে তিনিই কিন্তু সবার উপরে। পুসকাস ৮৪ গোল করেছেন মাত্র ৮৫ ম্যাচে। অর্থাৎ তার ম্যাচপ্রতি গোল প্রায় একটি করে (০.৯৯)। এই পরিসংখ্যানে তার ধারেকাছে আছেন কেবল জাপানের কুনিশিগে কামামোতো। তারও গোল ম্যাচপ্রতি ০.৯৯। তবে এ দুজনকে শিগগিরই অন্য কেউ টপকাতে পারবেন, সে ইঙ্গিত নেই।

৮. গডফ্রে চিতালু ও নেইমার: জাম্বিয়ার সর্বকালের সেরা ফুটবলারের তালিকায় উপরের দিকেই থাকবেন গডফ্রে চিতালু। নিজ দেশের তো বটেই, সর্বকালের সেরা ১০ গোলদাতার তালিকায়ও নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন চিতালু। ১১১ ম্যাচে তিনি করেছেন ৭৯ গোল। চিতালু পাঁচবার জাম্বিয়ার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন।

যৌথভাবে তালিকার আট নম্বরে আছেন নেইমারও। ব্রাজিলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমারের গোল ১২৮ ম্যাচে ৭৯টি। নিজ দেশের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার পথে নেইমার পেছনে ফেলেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার পেলেকে। তবে নেইমারের সুযোগ আছে সংখ্যাটা আরো বাড়ানোর।

৯. হুসেইন সাঈদ: ইরাকি ফুটবলার হুসেইন সাঈদ ১৩৭ ম্যাচে ৭৮ গোল করে আছেন তালিকার নয় নম্বরে। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ইরাক জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। তাকে শুধু ইরাকেরই নয়, এশিয়ার অন্যতম সেরা ফুটবলার বিবেচনা করা হয়।

১০. কুনিশিগে কামামোতো ও বাশার আবদুল্লাহ: জাপানি ফুটবলার কুনিশিগে কামামোতো ও কুয়েতের বাশার আবদুল্লাহ যৌথভাবে ৭৫ গোল করে ১০ নম্বর স্থানটি ধরে রেখেছেন। কিন্তু এর মধ্যে কামামোতো কিন্তু এক জায়গায় অনন্য। তিনি ৭৫ গোল করেছেন মাত্র ৭৬ ম্যাচে। অন্যদিকে ৪৭ বছর বয়সী বাশারের লেগেছে ১৩৪ ম্যাচ।

Exit mobile version