
ডা. সাহা প্রতীক প্রসাদ : দেশজুড়ে এখন কেক ও প্যাস্ট্রির জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। জন্মদিন, বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা ছোটখাটো আনন্দ—সব জায়গাতেই কেক অপরিহার্য উপাদান হয়ে উঠেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর আগারগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় খোলা জায়গায় কেক বিক্রি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি রয়ে যাচ্ছে প্রবলভাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খোলা জায়গায় বিক্রি হওয়া কেক শুধু স্বাদ নয়, সঙ্গে আনছে ব্যাকটেরিয়া, বিষাক্ত রাসায়নিক আর নানা রোগের আশঙ্কা।
কেন ঝুঁকিপূর্ণ এই কেকগুলো : ক্রিমকেক বা প্যাস্ট্রিতে থাকে প্রচুর পানি ও পুষ্টিগুণ, যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। লিস্টেরিয়া, স্যালমোনেলা, স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস, ব্যাসিলাস সিরিয়াসসহ নানাবিধ জীবাণু এসব কেক থেকে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। এতে দেখা দিতে পারে বমি, জ্বর, ডায়রিয়া এমনকি রক্ত আমাশয়ের মতো মারাত্মক উপসর্গ।
ঢাকার গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে যেসব কেক ফ্রিজে না রেখে খোলা জায়গায় বিক্রি করা হয়, সেগুলো অল্প সময়েই নষ্ট হয়ে যায়।
অতিরিক্ত ক্ষতির কারণ : কেককে আকর্ষণীয় দেখাতে ব্যবহৃত হয় নানা ধরনের কৃত্রিম রং ও ফ্লেভার, যা ক্যান্সারসহ জটিল রোগের কারণ হতে পারে। তাছাড়া এতে ব্যবহৃত ট্রান্স ফ্যাট ও অতিরিক্ত চিনি স্থূলতা, কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিস বাড়িয়ে দেয়। অনেকের ক্ষেত্রে বাদাম, দুধ বা ডিম থেকেও এলার্জি দেখা দেয়। এমনকি নিম্নমানের উপাদান ব্যবহারের কারণে কেকের মধ্যে প্লাস্টিক বা ভারী ধাতুর ক্ষুদ্র কণাও মিশে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
কেক কোনোভাবেই দৈনন্দিন খাবার নয়—এটি কেবল একটি ডেজার্ট। তাই অল্প পরিমাণে, নিরাপদভাবে প্রস্তুত ও সংরক্ষিত কেক খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সবচেয়ে জরুরি হলো, বিক্রেতা ও ক্রেতা—দু’পক্ষেরই সচেতনতা।
প্রকাশক : মোহাম্মদ বদরুজ্জামান তালুকদার
সম্পাদক : খান মোহাম্মদ সালেক
Copyright © 2025 Daily Dhaka Press. All rights reserved.