Site icon Daily Dhaka Press

দুর্গাপূজা : বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব 

সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ দিন অর্থাৎ ষষ্ঠী থেকে দশম দিন পর্যন্ত পাঁচ দিন দুর্গোৎসব হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গা দেবীকে মর্ত্যলোকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা পেয়েছে। এরপর ২১ অক্টোবর সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ২২ অক্টোবর মহাষ্টমী, ২৩ অক্টোবর এবং ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে।

দেবীর দুর্গার শুরু কোথায়? দেবীর ইতিহাস কী? সেই প্রাচীন যুগে দেবী এল কোথা থেকে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। দেবী দুর্গার ঘটনা সবচেয়ে বিশদভাবে লেখা মার্কণ্ডেয় পুরাণের ‘দেবী-মাহাত্ম্যে’ (যাঁকে শ্রীশ্রী চণ্ডী বলা হয়)। অন্য সব পুরাণে দেবীকে পাওয়া যায় অন্যভাবে।

তবে দুর্গা নামটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা দেবীপ্রতিমা। তাঁর দশ হাতে দশ রকম অস্ত্র, এক পা সিংহের পিঠে, এক পা অসুরের কাঁধে। তাঁকে ঘিরে থাকেন গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী আর কার্তিক ঠাকুর। যাঁরা সেকেলে কেতায় ঠাকুর বানান, তাঁদের ঠাকুরের পেছনে চালচিত্রে আরও নানা রকম ঠাকুর দেবতার ছবিও আঁকা থাকে। আর যাঁরা আধুনিক, তাঁরা প্রতিমার মাথার ওপর একটি ক্যালেন্ডারের শিবঠাকুর ঝুলিয়ে রাখেন। মোটামুটি এই প্রতিমা বছরের পর বছর ধরে দেখে আমরা অভ্যস্ত।

বর্তমানে যে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়, এই উৎসবকে অনেকে রামায়ণে বর্ণিত দুর্গাপূজার রূপ বলে মনে করেন। মা দুর্গার অকালবোধন এবং এর রামায়ণ যোগ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক। অযোধ্যাপতি রাম ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর সপ্তম অবতার। ১৪ বছর বনবাসকালে তাঁর স্ত্রী সীতাকে দৈত্যরাজ রাবণ অপহরণ করেন। রাবণের কবল থেকে সীতাকে মুক্ত করার জন্য রাম দৈত্যরাজা বধ করার সিদ্ধান্ত নেন। ভগবান রামচন্দ্র রাবণের প্রাণনাশে সাফল্য অর্জনের জন্য দেবী দুর্গার কৃপা কামনা করেন ও সে জন্য তিনি আদ্যাশক্তি দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। ঐতিহ্যগতভাবে দেবী দুর্গা বসন্ত ঋতুতে পূজিত হতেন। কিন্তু যুদ্ধের কারণে রামচন্দ্র শরৎ ঋতুতে দেবীর আশীর্বাদ জন্য প্রার্থনা করেন। যদিও শরৎকাল দেব–দেবীদের ঘুমের সময় বলেই জ্ঞাত। কারণ, এ সময় দিন ছোট ও রাত বড় হয় এবং রাত সাধারণত রাক্ষস জাতির পরিচায়ক বলে গণ্য করা হয়।

Exit mobile version