রিফাত কান্তি সেন –
“যেতে নাহি দিতে চাই, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।”মহালয়া থেকে দশমী টানা দশ দিনের সফর শেষে কৈলাসে ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা। ভক্তকূলে তাই বেদনার ঘনঘাটা। অশুভ শক্তির বিনাশ আর শুভ শক্তির বার্তা নিয়ে প্রতি বছরের মত এবারো মা এসেছিলেন। উৎসবে মেতে ছিলাম আমরা। বিদায়ে তাই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এভাবেই অশ্রুশিক্ত নয়নে কথা গুলো বলছিলেন দেবী ভক্ত পলাশ রায়।
যদিও মহালয়া দিয়ে উৎসবের শুরু কিন্তু আনুষ্ঠানিকতার মাত্রা যোগ হয় ষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে। মূল পাঁচদিনের দুর্গাৎসবের আজ শেষ দিন। বিসর্জনের মধ্যেদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গােৎসবের।
বিজয়া দশমীর ক্ষণে দেবীকে বিদায় জানাতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন দেবী দুর্গার ভক্তরা। এদিন যেন আকাশে-বাতাসে বিষাদ ছড়িয়ে পরে। ভক্তের চোখে অশ্রু যেন জানান দেয় মাকে বিদায় দিতে মন চাইছে না। মন্দিরে মন্দিরে চলে তেল সিঁধুরের খেলা। দেবীকে ভক্তিভরে এ বছরের মত শেষ দেখা দেখতে মন্দিরগুলোতে ভিড় করছেন ভক্তরা।
অকালবোধন দেবী দুর্গা এ বছর এসেছিলেন ঘোড়ায় চড়ে। যাবেন ও ঘোড়ায় চড়ে। ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হয় শারদীয় দুর্গাৎসবের। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী শেষে দেবীর বিদায়ের পালা। দশমীর ক্ষণে দেবী মর্ত্যে ছেড়ে পারি জমাবেন কৈলাসের উদ্দ্যেশে।
বাপের বাড়ি ছেড়ে স্বামীর বাড়িতে। সাথে থাকবেন তার সঙ্গীরাও। ঢাক, ঢোল, কাঁশর, ধুপ-ধুনো আর উলুধ্বণিতে মুখরিত ছিল মন্দির প্রাঙ্গণ। টানা পাঁচদিন ছিল উৎসবের আমেজ। বাঙালি সনাতন ধর্মালম্বীরা মেতেছিলেন উৎসবে।
পন্ডিত শ্রী শংকর চক্রবর্তী (সপ্ততীর্থ প্রথম শ্রেণীতে উপাধিপ্রাপ্ত) তিনি বলেন, বছর ঘুরে আবার আসুক মা। সকল অপশক্তির বিনাশ যাক। মা মঙ্গল করুক ধরনীর। হানাহানি ভুলে আমরা একটি শান্তির পৃথিবী চাই। বিদায়ে মায়ের কাছে এটাই প্রার্থনা।
কড়ৈতলী শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রমের সাবেক সভাপতি সমরেন্দ্র মিত্র বলেন, মা প্রতিবারের মত এবারো পৃথিবীতে এসেছেন। সকল অপশক্তিকে দূর করে পৃথিবীটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে মায়ের আশির্বাদের বিকল্প নেই। ভক্ত হিসেবে মায়ের কাছে চাওয়া তিনি যেন তার সকল সৃষ্টিকে পুণ্যের বাঁধনে বেঁধে রাখেন।
সম্পা দত্ত বলেন, মা এলেই যেন উৎসবের একটা আমেজ ফিরে পাই। ঢাক, ঢোল আর কাশির বাজনায় হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। মন্দিরে মন্দিরে চলে আরাধনা। বাঙালি সনাতনীদের ঘরে ঘরে চলে উৎসবের আমেজ। যদিও বলা হয় ঘোড়ায় চড়ে দেবী মর্ত্যে আসলে সেটা অশুভ কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, পুত্র কুপুত্র হলেও মাতা কুমাতা হন না। সেহেতু মা কখনোই সন্তানদের বিপদে ফেলবেন না।
বছর ঘুরে আবার আসুক মা। হানাহানি, মারামারি ভুলে মানুষে মানুষে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি হোক। তাইতো দেবী ভক্তরা মন্ত্রে উচ্চারিত করলেন, যা দেবী সর্বভূতেষু মাতুরূপেণ সংস্থিতা
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ