নিজস্ব সংবাদদাতা : বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিন দিনের অবরোধের দ্বিতীয় দিন চলছে আজ। সকালে রাজধানীতে গণপরিবহণ কম দেখা গেছে। হরতাল ও অবরোধের প্রথম দিনের মতো আজও গাড়ি অনেক কম। এর ফলে অফিসগামী মানুষদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। যাত্রী সংকটে ঢাকা ছাড়ছে না কোনো দূরপাল্লার বাসও।
বুধবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুর, কুড়িল বিশ্বরোড, পলাশী, উত্তরা, বাড্ডা, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এসব এলাকায় ঢাকার আন্তঃনগর পরিবহণের বাস কিছু দেখা গেলেও সংখ্যায় অনেক কম। তবে বাসে যেসব যাত্রী উঠছেন তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।
গুলিস্তান যাওয়ার জন্য কুড়িলে অপেক্ষা করা নাসিমা বলেন, যানজটের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হই। অবরোধে সড়ক ফাঁকা থাকবে জেনে আজ ৮টার পর বের হয়েছি। কিছুক্ষণ আগে এসে দাঁড়ালাম। সড়কে গাড়ি কম চলছে। তবে আশা করছি গাড়িতে উঠতে পারব।
অবরোধের কারণে মনে কোনো আতঙ্ক কাজ করছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেভাবে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় তাতে আতঙ্ক থাকাটা স্বাভাবিক। অফিস কাছাকাছি হলে হেঁটেই যেতাম। আমার অনুরোধ দলগুলো যেন একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধান করে। কেননা, এভাবে হরতাল অবরোধ দিলে তাতে তো দেশেরই ক্ষতি হয়। আমাদের ভোগান্তি তো আছেই।’
জমিসউদ্দিন রোড এলাকায় গণপরিবহণ কম চলতে দেখা গেলেও প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা ছিল বেশি। তবে এই সংখ্যাটাও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম।
গণপরিবহণ কম থাকায় অটোরিকশাচালকরা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। এতে অনেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গাবতলীতেও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ঢাকায় চলাচল করা গণপরিবহণ কম দেখা গেছে। ফাঁকা সড়ক পেয়ে গাড়িগুলো দ্রুত গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। গাবতলী থেকে দূরপাল্লার বাস চলছে না বললেই চলে।
হানিফ পরিবহণের এক কর্মী বলেন, আতঙ্কের কারণে যাত্রী না আসায় আমরা বাস ছাড়ছি না। অথচ প্রতি ঘণ্টায় আমাদের বাস ছেড়ে যায়। তা ছাড়া কোনো গাড়ি ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলে মালিক কিংবা শ্রমিকদের অনেক ক্ষতি হয়। সেই আতঙ্ক থেকেও বাস ছাড়ছে না।
গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। কিন্তু সমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তুমুল সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হলে হরতাল ডাকে বিএনপি।
রোববার হরতাল শেষে তিন দিনের অবরোধ ডাকে প্রায় দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। একই কর্মসূচি দেয় জামায়াতে ইসলামীও। জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা আসে গত সোমবার।
অবরোধের মধ্যেও সারা দেশে পণ্য ও যাত্রী পরিবহণ চালু রাখার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি।
মিরপুর-১০ থেকে যমুনা ফিউচার পার্কে যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষায় থাকা রওশন বলেন, বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষায় আছি বাসের জন্য, কিন্তু কোনো বাস আসছে না। যদিও দু-একটি এসেছে তা যাত্রীতে ভরা।