জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ‘সুন্দরবন’ এলাকায় রাতের আধারে নির্বিচারে অর্ধশত গাছ কাটার প্রতিবাদে পথনাটক ও বৃক্ষরোপণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরবন এলাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। এসময় ফলজ, কাষ্ঠল সহ মোট ২০টি বৃক্ষরোপণ করেন শিক্ষার্থীরা।
বৃক্ষরোপণ শেষে ওই স্থানে একটি পথনাটক পরিবেশন করেন তারা।
এসময় বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মেহরাব সিফাত বলেন, “রাত্রীকালীন যেই বৃক্ষনিধন প্রশাসন করেছে। এটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা।”
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটি ইকোলজিক্যাল হটস্পট। বিশেষজ্ঞদের মতামত না নিয়ে বৃক্ষনিধন করা হচ্ছে। উন্নয়নের জন্য গাছ কাটতে হবে। কিন্তু সেটা হতে হবে একটা নিয়মনীতির মধ্যে।”
রাতের আঁধারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইলেক্ট্রনিক করাত দিয়ে গাছ কেটে ফেলার ঘটনা প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর না হওয়াকে প্রশাসনের অদক্ষতা বলে আখ্যা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরবন গাছ কেটে ফেলা হয়েছে সেখানে নতুন করে বৃক্ষরোপন ও সংরক্ষনের ব্যাবস্থা করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ক্যাম্পাসে প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিবর্তন আনানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের কার্যকর অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে উন্মুক্ত মতবিনিময়ের আয়োজন করতে হবে।
তৃতীয়ত, যেকোনো ধরণের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে যেখানে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেখানে অবশ্যই আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী এনভায়রনমেন্টাল সার্ভে এবং এনভায়রনমেন্টাল ইম্পেক্ট এসেসমেন্ট নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রথম দাবিটি বাস্তবায়ন করতে হবে। বাকী ২টি দাবীর জন্য আমাদের আশ্বস্ত করতে হবে। দাবী মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে হুশিয়ারি করেন তারা।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পেছনে সুন্দরবন এলাকায় আইবিএ-জেইউ এর নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়।