ফরিদপুর থেকে তৌহিদ তুহিন:
সমাজে বিভিন্ন পেশার ছদ্মবেশ ধারণ করলেও, মূল পেশা তাদের ডাকাতি। একই সাথে অপহরণ ও খুন করে মালামাল লুট করা ছিল ওদের নেশার মত। বিশেষ করে সড়ক পথ থেকে শুরু করে বাসা বাড়ি অফিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি করা ছিল ওদের নৈমিত্তিক কাজের রুটিন। দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নেটওয়ার্ক ভিত্তিক ডাকাতি সংঘটিত করে আসছিল। কিন্তু বিধি বাম। ২১ মামলার আসামি হয়েও মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে ডাকাতি করতে এসে অবশেষে ধরা, সারাদেশের ডাকাত চক্রের নেটওয়ার্কের দুই নাটের গুরুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ডাকাতি ও খুনের মামলার দুই আসামিকে আটকের ঘটনা প্রকাশ করতে সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই বক্তব্য তুলে ধরেন গতকাল দুপুর ১২ টার সময় জেলা পুলিশ সুপার এমএ শাহজাহান।
আটককৃতরা হলেন বরগুনা জেলার মোঃ শাহ আলম আকন ওরফে কালু (৩৫) ও মোঃ আবুল কালাম(৫০)। গতকাল ভাঙ্গা থানার মুনসুরবাদ এলাকার ঢাকা-খুলনা হাইওয়ে রাস্তার উপর থেকে দুপুর পৌনে দুইটার সময় তাদের আটক করা হয়।
এ সময় ডাকাতদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, প্রায় ৩০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরে পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান জানান, গত ১২ ই নভেম্বর বিকাল পৌনে ৫টার সময় ৬ জনের একটি ডাকাত দলের সদস্যরা ভাঙ্গার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে থেকে শহিদুল নামে এক যাত্রীকে তাদের মাইক্রোবাসে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে উঠায়। গাড়িতে উঠতেই তার হাত পা চোখ বেঁধে তাকে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে জখম করে। পরে তার কাছ থেকে টাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া তার পরিবারের কাছ থেকে আরও ৪৩ হাজার টাকা নগদ একাউন্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নেই। এ সময় শহিদুলের পরিবারের কাছে আরো পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করলে তারা ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানাকে বিষয়টি অবগত করে। ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ বিষয়টি জেনে প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ের মুনসুরবাদ এলাকার চেক পোষ্টের কাছে গাড়ি রেখে ডাকাত দল পালানোর চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ দুই ডাকাতকে হাতেনাতে আটক করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা দেশের বিভিন্ন জেলার হাইওয়েতে মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের যাত্রী সেজে লোকজনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ডাকাতি করার পাশাপাশি মালমাল লুট ও হত্যার ঘটনার কথা স্বীকার করে। তারা জানায় তাদের মধ্যে খুন ও ডাকাতিসহ আসামি মোহাম্মদ শাহ আলমের নামে ২১ মামলা এবং মোঃ আবুল কালামের নামে ৮টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিধি মতামত বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানাননান পুলিশ সুপার এমএ শাহজাহান।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ প্রশাসনের উধ্তন কর্ম কর্তারাসহ ভাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ জিয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।