রাজিব রায়হান, জাবি প্রতিনিধি:
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটর ডাকা হরতালের সমর্থনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা মিছিল করতে গেলে বাধা দেয় আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে । তারপর তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেন।
এর আগে বেলা ১১ টার দিকে বিশ্বদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে জয় বাংলা গেইট পর্যন্ত মিছিল করতে বের হলে পুলিশ বাঁধা দেয় তাদের। কিছুক্ষণ বাকবিতন্ডা হলে পরে সেখানেই মানববন্ধন করতে বাধ্য হয় তারা। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা- কর্মীরাদেরও সেখানে অবস্থান করতে দেখা যায়।
জাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় জানান, “এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে হরতাল সমর্থনে মিছিল করতে গেলে বাঁধা দেয় পুলিশ। তাই আমরা অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করি।”
শ্রমিক ফ্রন্ট সাভার আশুলিয়ার সাধারণ সম্পাদক আহমেদ জীবন বলেন, “আমরা গতকাল দেখলাম একটা অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কিভাবে অবৈধভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। এই তফসিল সম্পূর্ণ অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক। গত ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনের মতো আবারো একটা প্রহসনের নির্বাচন করাই এই তফসিলের উদ্দেশ্য। আমরা এই নির্বাচন চাই না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দিতে হবে। এই সরকারের আধীনে কখনোই নির্বাচন সুষ্ঠ হয়নি এবং হবেও না। আমরা চাই মানুষের ভোট দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য মানুষের নাগালে থাকুক।”
জাবি ছাত্র ইউনিয়নের আহব্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, “ঐতিহাসিকভাবে এই দেশে কখনোই দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। ১৯৯৬, ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের নির্বাচন কোনোটাই সুষ্ঠু হয়নি। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে এবারও নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এই দেশে কখনোই স্বৈরাচার শাসক টিকতে পারেনি। স্বৈরাচার আইয়ুব খান কিংবা এরশাদ কেউ টিকতে পারেনি, এই স্বৈরাচার সরকারও টিকতে পারবে না।”
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, “গতকাল নির্বাচন কমিশন অবৈধ একতরফা তফসিল ঘোষণা করেছে যা এদেশের সাধারণ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকার গায়ের জোরে নির্বাচন করতে চাইছে। সরকারের কর্মীরা পাঁচশ একহাজার টাকায় তাদের বিবেক বিক্রি করে দিয়েছে। দেশে গনতান্ত্রিক মূল্যবোধ উঠিয়ে স্বৈরাতন্ত্র কায়েম করেছে এ সরকার। আজ আমাদের মিছিলের বাঁধা দেওয়াই প্রমান করে বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেদিন বেশি দূরে নয় এদেশের জনগন রাস্তায় নেমে পড়বে এবং তাদের গনতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত বাড়ি ফিরবে না।”
এছাড়া ৪৩ সেকেন্ডে ৫৭ টি ভোট দেওয়ার ভাইরাল হওয়া ভিডিওর কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “যে সরকারের আমলে সামান্য স্থানীয় পর্যায়ের একটা নির্বাচন’ই সুষ্ঠ হয় না। সেখানে জাতীয় নির্বাচন কখনই গণতান্ত্রিক উপায়ে সম্ভব না। তাই এই প্রহসনের তফসিল বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া হোক।”
মিছিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম কামরুজ্জামান বলেন, “আমরা কোন ধরনের বাধাই দেইনি তাদের। আমরা যাওয়ার পর তারা স্বাভাবিকভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে।”