ধামরাই( ঢাকা) প্রতিনিধি : ঢাকার ধামরাইয়ে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। রয়েছে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে যএ কওন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। নিজেদের স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে দির্ঘদিন ধরে কয়লা তৈরির ব্যবসা করে থাকেন ওই ব্যক্তিরা।
একাধিকবার উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ভেঙে দিলেও থেমে থাকেননি অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কার্যক্রম। লোকালয়ের মাঝখানে কয়লা তৈরির কাজ চলছে।
অথচ, স্থানীয় সাধারণ জনগণ নিরব ভূমিকা পালন করছে। ওই প্রভাবশালীদের সামনে কথা বলতে সাহস পায়না স্থানীয়রা। অবৈধ কয়লা তৈরির সাথে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরহাদ হোসেন , রাজনৈনিক দলের সদস্য হারুন ও হযরত আলী এবং শাহজানান নামে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবৈধ কয়লা তৈরির সাথে জড়িত বলে জানা যায়। শুধু কয়লাই নয় কয়লা তৈরির পাশে বিষাক্ত সীমা তৈরির কাজের প্রস্তুতিও চলছে। এমন দৃশ্য দেখা যায়, উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের গোলাকান্দা এলাকায়।
গত (১৬ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধামরাই উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের গোলাকান্দা গ্রামে কয়েকটি বড় আকারের মাটির তৈরি ভিটি তৈরি করে কাঁচা কাঠ পুরিয়ে লোকালয়ে অবৈধ কয়লা তৈরি করা হচ্ছে। সারি সারি কাঠের স্তুপ সাজিয়ে মাসব্যপি আগুন দিয়ে পোড়ানোর পর তৈরি করা হয়ে থাকে কয়লা। কয়লার বিষাক্ত ধোঁয়ায় গবাদি পশু, ছোট বাচ্চা ও বয়স্কদের নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে বলে জানা যায়।
এর আগে কয়লার ধোঁয়ায় গবাদি পশু মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানান পর অবৈধ কয়লা তৈরির চুল্লী ধ্বংসসহ জরিমানাও করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একাধিক বার কয়লা ও বিষাক্ত সীসা তৈরির কারখানা বন্ধ করে দিলেও থেমে থাকেন নি অবৈধভাবে কাঠ পুরিয়ে কয়লা ও বিষাক্ত সীসা তৈরির কাজ।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুয়েল বলেন, সীসা ও কয়লা তৈরির কারণে দূর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। আমরা এর পাশের রাস্তা দিয়ে নাক চেপে রাস্তা পারাপার হয়ে থাকি। অনেকবার এই কারখানা ভেঙে দিয়েছে কিন্তু আবার তারা চালু করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, যারা কয়লা তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। ফরহাদ হোসেন নামে এক মেম্বার রয়েছে।
সে পুলিশ ও চেয়ারম্যানের ভয় দেখায়। বলেন, কোথাও গিয়ে অভিযোগ করেও লাভ হবে না। অবৈধ কয়লা তৈরির মালিক শাহজাহান বলেন, যা খুশি করেন।
প্রশাসন অনেকবার ভেঙেছে। কিছুই হয় নি। এখন পুরাতন ব্যাটারী পুরিয়ে সীসা তৈরির কাজের প্রস্তুতি চলছে। আর সীসা তৈরির কাজ বাইশাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান নিজেই করবেন। কয়েক দিনের মধ্যেই কাজ চালু হবে।
তবে কারখানার অন্যান্য মালিক ফরহাদ মেম্বার ও হযরতের সাথে মুটোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেন নি।
কয়লার ধোঁয়ায় শিশুদের হাঁচি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে শিশুসহ বয়স্করাও আক্রান্ত হয়ে থাকেন বলে জানা যায়।
অবৈধ কয়লার ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হয়ে থাকে। একাধিক বার এসব কয়লা তৈরির কারখানা অভিযান চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
এসব অবৈধ কয়লা তৈরির কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী।