জাবি সংবাদদাতা:
প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরেও নতুন হল চালু করতে প্রশাসনের অক্ষমতা এবং ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস নেয়ার নামে নজিরবিহীন প্রহসনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে জাবি ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, “আবাসন নিশ্চিতের কথা বলে পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মাস পরও স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এখন তো কোন মহামারি বা দুর্যোগের সময় নয় তবে কর্তৃপক্ষ কেন নবীন শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস শুরু কথা বলছে। আমরা মনে করছি এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ লাভ, মুনাফা আদায় এবং হিসাব-নিকাশ সব মিলিয়ে একটা রাজনৈতিক পরিকাঠামোর শিকার হচ্ছে আমাদের নবীন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আসার প্রথম দিন, তাদের আবেগ অনুভূতি এবং তাদের আনন্দ সবকিছুকে বিসর্জন দিয়ে, গলা টিপে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যে প্রহসন চালাচ্ছে তার জন্য এই আজকে আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশ “
এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইসলাম মেঘ বলেন “প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা যেন ‘বউকে না পেয়ে, ঝিকে পেটানো’।
একদিকে প্রশাসন বলছে হলে সিট সংকট কিন্তু আমরা হল গুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখি অসংখ্য অছাত্র যাদের ছাত্রত্ব ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে তারা নির্দ্বিধায় নিঃসঙ্কোচে অবস্থান করছে হল গুলোতে। তাদেরকে বের করতে প্রশাসন কোন ধরনের পদক্ষেপে নিচ্ছে না।
বরং ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সিট না দিতে পেরে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যারা এক রাশি স্বপ্ন নিয়ে এই ক্যাম্পাসে ভর্তি হয়েছে, তাদের স্বপ্নকে ধুলিস্যাৎ করে দিচ্ছে এই প্রশাসন।
যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এক সেমিস্টার এমনকি মেডিকেল কলেজ গুলো প্রায় এক বছর শেষ করতে চলেছে।”
ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক (একাংশ) আলিফ মাহমুদ বলেন, “কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন হল উদ্বোধন করা হলেও এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে হলে সিট সংকট।
বিশ্ববিদ্যালয় তাদের হলে সিট নিশ্চিত করতে না পারলেও ঠিকই হল গুলোতে অবস্থান করছে অছাত্ররা। অনলাইনে যদি ক্লাস হবে তাহলে প্রথম থেকে কেন নেয়া হলো না? এত টালবাহানা কেন করা হলো? একটি সেমিস্টার নষ্ট করে দেওয়ার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকেই নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ” বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনোই শিক্ষার্থীবান্ধব নয়, এজন্যই একাডেমিক কাউন্সিলের নির্দেশনা ছাড়াই অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিজেই কোনো আইন কানুন এর তোয়াক্কা করে না, কখনো সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার করেনি ।
এজন্যই তো আজ একাডেমিক কাউন্সিল ছাড়াই জোর-জবরদস্তি করে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর পিছনে মূলত নিয়োগ ব্যবসা ও প্রশাসনের স্বার্থ হাসিল প্রধান কারণ বলে মনে করছি আমরা”