Site icon Daily Dhaka Press

অবৈধপথে আসা ভারতীয় চিনি দেশীয় মোড়কে বাজারে বিক্রি করত চক্রটি

স্টাফ রিপোর্টার: পাশবর্তী দেশ ভারত থেকে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র চোরাচালানের মাধ্যমে নিম্নমানের চিনি আমদানি করে আসছিল। এরপর সেই চিনি এস আলম, ফ্রেশ, ইগ্লুসহ দেশীয় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ভুয়া মোড়কে বাজারজাত করার অভিযোগে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)

রবিবার রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার কমলাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক টন চিনিসহ তাদের গ্রেফতার করে ডিবির মতিঝিল বিভাগের স্পেশাল অপারেশন টিম।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুমিল্লার চকবাজারের আরিশা ট্রেডার্সের ম্যানেজার নিমাই বনিক (৪৪), ফেনীর সোনাগাজীর ইসমাইল ব্রাদার্সের মীর হোসেন (৩৮) ও চট্রগ্রামের চিনি বিক্রির দালাল আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (৩৯)।

সোমবার ( ২৭ নভেম্বর ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ কালে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য জানান।

গোয়েন্দা প্রধান বলেন, সম্প্রতি দেশের একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে তারা বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মোড়কে একটি চক্র ভারতীয় নিম্নমানের চিনি বাজারজাত করে আসছে। এতে মানুষ প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে মাঠে নামে ডিবির মতিঝিল বিভাগ।

তিনি আরও বলেন, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে কুমিল্লার সাহেব বাজারের মমিন ব্রাদার্স প্রতিদিন ৪০০-৫০০ বস্তা চোরাচালানের মাধ্যমে সরকারী শুল্ক ও কর ফাঁকি কুমিল্লা সদর থানার বারাপাড়ার আরিশা ট্রেডার্সের মালিক খোরশেদের গুদামে মজুদ করত। এরপর এস আলমসহ দেশীয় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নকল মোড়কে প্যাকেট তৈরি করে সেগুলো বিক্রি করত।

এরপর নিমাই বনিকের নির্দেশে আরিশা ট্রেডার্সের গুদামে মজুদ করা অবৈধ চিনি ফেনীর ইসমাইল ব্রাদার্স, চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জের জমজম ট্রেডার্স, চট্টগ্রামের আল মদিনা ট্রেডার্স, শহীদ ট্রেডার্সসহ ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে হাজার দরের চেয়ে কম দামে বিক্রি করা হত।

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, দেশের বাজারে চিনির ৫০ কেজির প্রতি বস্তার দাম ৬৭০০ টাকা। কিন্তু ভারতীয় চিনি প্রতি বস্তা ৬২০০ টাকা। প্রতি দিনই মমিন ট্রেডার্স আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ বস্তা চিনি কর ফাঁকি এনে এভাবে বিক্রি করত। এর কারণ হিসেবে তারা আমাদের জানিয়েছে, দেশে চিনির দাম বেশি। অপর দিকে ভারতে চিনির দাম কম তাই ভারতীয় চোরাকারবারিরা লাভের আশায় বাংলাদেশের চোরাকারবারিদের কাছে চিনি বিক্রি করছে। তারা বস্তা প্রতি ৪০০-৫০০ টাকা কম দামে বিক্রি করত। এরপর দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে বাজারে ছাড়া হত।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, দেশীয় বাজারের চিনির মূল্যের উপর ভারতীয় চোরাকারবারিরা চিনির মূল্য নির্ধারন করে। দেশের বাজারে চিনির মূল্য যখন বস্তা প্রতি ৬৮০০ টাকা তখন ভারতীয় চিনি ৬৩০০ টাকা দরে দেশে বিক্রয় করে। যার কারনে দেশীয় চিনি শিল্প আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এবং সরকার বিশাল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অসংখ্য শ্রমিক কর্মচারী বেকার হচ্ছে।
এরকম অসংখ্য চোরাকারবারি চক্র সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। যারা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। শীঘ্রই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Exit mobile version