রাজিব রায়হান,জাবি প্রতিনিধি:
দীর্ঘ সাত বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের হল কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কর্মীসভা করা হলেও কমিটি কবে এ বিষয় জানে না ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ও পদপ্রত্যাশীরা।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে শাখা ছাত্রলীগকে আরো বেগবান করার জন্য সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে মধ্যেই বড় করে সম্মেলন আহবান করে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে হল কমিটি ঘোষণা করার কথা বলে আসছিলেন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। কমিটিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে ৪৬ ব্যাচ থেকে ৪৮ ব্যাচ পর্যন্ত ছাত্রলীগ নেতাদের নেতৃত্বে আসার কথা ছিল।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে হল কমিটি না হওয়ায় পদপ্রত্যাশীদের মাঝে হতাশা, ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা ‘পরিচয়হীনতায়’ ভুগছে। নেতাদের মধ্যে ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। তৈরি হচ্ছে গ্রুপিং, বাড়ছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এমন সব কথা বলছেন পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরাই। আর কমিটি না দেওয়ার পেছনে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি টেন্ডার হওয়া প্রায় ৪০০ কোটি টাকার কাজের সম্পৃক্ততা দেখলেও কথা বলতে রাজি হননি তারা। যদিও কমিটিতে পদ-প্রত্যাশীরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন নি তবে সত্যতা স্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটিতে থাকা জেষ্ঠ কয়েকজন নেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি হলের সভাপতি পদপ্রার্থী এক নেতা জানান, “কর্মীসভার পরপরই হল কমিটি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কয়েক মাস চলে গেল হল কমিটি দেয়ার নামই নেই। ক্যাম্পাসে তো কোনো সংকট বা ছাত্রলীগের কোনো খারাপ সময় যাচ্ছে না তবে তারা কেন এত দেরি করছে কমিটি দিতে আমরা যারা পদপ্রত্যাশী আছি কেউ জানি না। এ মাসেও কমিটি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চুপ করিয়ে রাখা হয়েছে আমাদের কিন্তু কোনো পদক্ষেপই আমরা দেখছি না এটা বলে আক্ষেপ করেছেন।”
তিনি আরো বলেছেন, “আমরা ভেবে ছিলাম জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের হল কমিটি দেয়া হবে এবং আমরা একটা সাংগঠনিক পরিচয় নিয়ে নির্বাচনের কাজকে বেগমান করতে পারবো কিন্তু সেটা কতটুকু সম্ভব হবে বুঝতে পারছি না। “
শেখ রাসেল হলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শেখ রাজু জানান, “যদিও হল কমিটি দেওয়ার নির্দিষ্ট কোন তারিখ ছিল না, তবে অতি দ্রুতই কমিটি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে আমাদের।শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আমাদের জানিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের কিছু সীমাবদ্ধতা ও ব্যস্ততার কারণে হল কমিটি দিতে দেরি হচ্ছে। সামনে নির্বাচন এই মুহূর্তে আমাদের হল কমিটি খুবই প্রয়োজন বলে মনে করছি আমি। কারণ আসন্ন নির্বাচনে ‘নৌকা প্রতীক’ এ কাজ করতে আমাদের একটা পরিচয় খুবই দরকার “
কমিটির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, “হল কমিটি আমাদের শাখা ছাত্রলীগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কমিটি দিতে দেরি হচ্ছে কারণ নেতৃত্বে যারা আসবে তাদের আমরা ভালো করে যাচাই-বাছাই করছি এ সময়টাতে। আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং একটা ভালো সময় দেখে অতি দ্রুত এ কমিটি ঘোষণা করা হবে।”
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, “আমরাও চাই অতি দ্রুত হল কমিটি হোক। মূলত আমরা উৎসব মুখর পরিবেশের মাধ্যমে কমিটি দিতে চাই। যেহেতু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে ফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের ব্যস্ততাও বেড়েছে। কমিটি দিতে হলে তাদের উপস্থিতি আগে নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। “
এছাড়াও তিনি আরো বলেন, ” আমাদের ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন হল কমিটি ছিলনা। আমরা চাই অনেক বড় সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটি দেওয়ার জন্য।এজন্য নির্বাচনের আগে যদি সম্ভব না হয় তবে পরে করব।”