চট্টগ্রাম ব্যুরো : বিধিবহির্ভূতভাবে চট্টগ্রামের বেসরকারি আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করায় চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরীকে শোকজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পরিচালক মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় এসব তথ্য জানা গেছে।
ইউজিসি ও দুদক সূত্র জানায়, সম্প্রতি এসব অভিযোগ নিয়ে একজন ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেন। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। গত ৩ ডিসেম্বর দুদকের (দৈনিক ও সাম্প্রতিক সেলের) পরিচালক উত্তম কুমার মণ্ডল স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করে।
দুদকের ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যকে শোকজ করে নোটিশ ইস্যু করে বলে জানা গেছে।
আইআইইউসির রেজিস্ট্রার বরাবরে পাঠানো শোকজের চিঠিতে বলা হয়— সূত্রোক্ত স্মারকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রিজিয়া সুলতানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতি মাসে সম্মানী বাবদ ৭ লাখ টাকা করে মোট ১৪ লাখ টাকা সম্মানী গ্রহণ ও ব্যবহৃত ব্যক্তিগত গাড়ির জ্বালানি বাবদ ২ লাখ টাকা, গাড়িচালকের বেতন বাবদ ৭০ হাজার টাকা এবং ব্যক্তিগত সহকারীর বেতন প্রদানসহ আরও কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, ট্রাস্ট আইন ১৮৮২-এর ৫০ ধারায়’ ‘এ ট্রাস্টি হ্যাজ নো রাইট টু রিমিউনারেশন ফর হিজ টেরিবল স্কিল অ্যান্ড লস অব টাইম ইন এক্সিকিউটিং দ্যা ট্রাস্ট এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০-এর ধারা ৪৪(৭) মোতাবেক বেসরকারি সাধারণ তহবিলের অর্থ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশে ব্যয় করা যাবে না মর্মে উল্লেখ রয়েছে।
উল্লিখিত আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের ওইরূপ আর্থিক সুবিধা গ্রহণের সুযোগ নেই। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক প্রেরিত সংযুক্ত অভিযোগের বিষয়ে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রেরণের অনুরোধ করা হলো।
এদিকে এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত এম নদভী দম্পতিকে মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি, তাই কোন মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।
বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহল কৌতূহল হয়ে ওঠেছে। তাদের অনেকে বলেন, আইন প্রণেতারা যদি এমন করে আর সাধারণ মানুষ করবে কি।