রাজিব রায়হান,জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জীববিজ্ঞান অনুষদের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৬ ব্যাচের পাঠদান চলছে মাত্র ২ টি কক্ষেই। শ্রেণিকক্ষের এমন তীব্র সংকটে শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রায় সবগুলা বিভাগেই ক্লাসরুম সংকট থাকলেও বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সেটি তীব্র।
তাদের ছয়টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র দুইটি ক্লাসরুম রয়েছে। নেই পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা। এ অবস্থায় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ভবনের দোতলা তাদের সম্প্রসারিত ক্লাসরুম নির্মাণের কাজ চলছে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ” ক্লাসরুম সংকটের বিষয়টা নতুন নয়। ক্লাস, ল্যাবের সিডিউল বাকি ব্যাচগুলোর সাথে মিলিয়ে চালাতে বেশ বিড়ম্বনায় পরতে হয়। দিনশেষে এই সমস্যাগুলোই সেশনজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”
একই বিভাগের ৪৯ তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, “এখন ৫১ ব্যাচের পরীক্ষা চলছে। ক্লাস করার জন্য পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আমাদের ক্লাসরুম সংকট রয়েছে তাছাড়া পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা নেই। ৪৯,৪৮,৪৭ ব্যাচ ক্লাসরুম সংকটের জন্য সেশনজটে পড়েছে। ছয়টি ব্যাচের জন্য দুইটি ক্লাসরুম এটা কখনো কল্পনা করা যায়! “
ভবন নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন বলেন, “বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভবন নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বাজেট ছিল না।
কিন্তু তাদের ক্লাসরুম সংকট দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ ফান্ড থেকে ভবন নির্মাণ শুরু করা হয়। ভবন নির্মাণ বিলের অর্ধেক আমাদের অফিস এবং বাকি অর্ধেক কম্পট্রোলার অফিস দেওয়ার শর্তে কাজ শুরু করা হয়। বর্তমানে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিস তহবিলে টাকা কম থাকায় কাজের গতি কমে যায়। বিশেষ উৎস থেকে ফান্ড পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা ঠিকাদারকে টাকা দিয়ে দ্রুততার সাথে কাজ শেষ করতে বলবো।”
ডেপুটি কম্পট্রোলার মো.মাহফুজ মিয়া বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকায় আমরা প্রকল্পটির বিল করতে পারছি না।
এছাড়া আমাদের চেষ্টার কোন ধরনের ঘাটতি নেই। অতি দ্রুত আমাদের ফান্ড আসবে হবে তখন আমরা বিলটি করতে পারবো।”
এ বিষয়ে ভাই ভাই ট্রেডার্সের ঠিকাদার রহমাতুল্লাহ বলেন, “কাজের গতি আগের থেকে অনেক কমে গেছে কারণ আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন কোনো টাকাই পাচ্ছিনা।
অনেক আগে ছাদ ঢালাইয়ের করেছি এখনো বিল পায়নি। টাকা না পেলে আমরা কাজ করতে পারছি না, কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। সব মিলিয়ে অনেক সমস্যার ভেতরে আছি।”
বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, “এ মাসে আমাদের নতুন ক্লাসরুম বুঝে পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার বিল না পাওয়াই কাজ চলছে ধীর গতিতে। বর্তমানে কাজের যে গতি ছয় মাস এক বছরেও মনে হয়না সম্ভব হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিভাগে এখন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ সময়ে অন্যান্য ব্যাচের ক্লাস নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ফলে দীর্ঘ সেশনজট সৃষ্টি হতে পারে।”