আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় সময়ই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার, শ্রম অধিকার লঙ্ঘনসহ নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। তবে যুক্তরাষ্ট্র যে শুধু নিষেধাজ্ঞা দেয় তাই নয়, বরং তাদের ওপরও অন্য দেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা হলো এক ধরনের শাস্তি। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দেশের অর্থনীতিকে বাধাগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত করতে এ শাস্তি দেওয়া হয়। এরমাধ্যমে অর্থনৈতিক ও পণ্যের লেনদেন বন্ধ বা সীমিত অথবা শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বাণিজ্য কঠিন করে দেওয়া হয়। এটা যে কোনো দেশ চাইলেই— অন্য দেশের ওপর আরোপ করতে পারে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা অন্যদের চেয়ে শক্তিশালী ও কার্যকরী হয়। কারণ বিশ্বব্যাপী যেসব লেনদেন হয় সেগুলো মার্কিন ডলারের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এছাড়া বৈশ্বিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা সুইফটও যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রও অন্য দেশের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে।
• চীন
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ২০১৮ সালে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়। এই বাণিজ্য যুদ্ধ মূলত শুল্ক আরোপ ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন চীনা পণ্যের ওপর ২৫০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আরোপ করেন। এরমাধ্যমে দেশ দুটির মাঝে বাণিজ্য যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
২৫০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আরোপের জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করে।
• কানাডা
২০১৮ সালের মে মাসে কানাডার স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর বদলা নিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, কাগজ, প্লাইউড, হুইস্কিসহ অন্যান্য পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন। এরমাধ্যমে মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক শাস্তি প্রদান করেন তিনি।
• ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)
কানাডার পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে ইউরোপের দেশগুলোর বৃহৎ জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সংস্থাটি ঘোষণা দেয়, ইইউর বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম এবং অন্যান্য কৃষিপণ্য যেমন— কমলার জুস, ক্র্যানবেরি জুস প্রবেশে শুল্ক দিতে হবে। এছাড়া শুল্কভুক্ত পণ্যের তালিকায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ওয়াশিং মেশিন, মোটরসাইকেল, মেকাপ ও কসমেটিকস এবং কাপড়কে যুক্ত করা হয়।
• মেক্সিকো
ওই দেশগুলোর মতো মেক্সিকোও শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে ২০১৮ অর্থনৈতিক শাস্তি প্রদান করে। ওই বছর দেশটির চিজ, শূকর, আপেলসহ অন্যান্য পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করে মেক্সিকো।
• রাশিয়া
২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সব খাদ্যপণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় রাশিয়া। পরবর্তীতে এ নিষেধাজ্ঞা ২০১৯ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।