Site icon Daily Dhaka Press

ঋষি সম্প্রদায়সহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির দ্বারাই উন্নয়ন হবে

নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রতিনিয়ত অবহেলা, বৈষম্য, সামাজিক প্রতিবন্ধকতাসহ নানা ধরনের অধিকার বঞ্চিত ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষ।না পাওয়ার হাহাকার, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে বসবাস এ যেন তাদের নত্যি দিনের চিত্র, যার সমাধানে প্রয়োজন স্থানীয় ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ।

আজ ১৩ ডিসেম্বর ব ধবার বাংলাদেশ রিপোটার্স ইউনিটির সাগর রুনি কনফারেন্স হলে ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার সংরক্ষন বিষয়ক প্রেস কনফারেন্স এ চিত্র তুলে ধরেছেন ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গঠিত অ্যাডভোকেসী ফোরাম ও গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা (জিবিএসএস)।

কনফারেন্সে বক্তারা বলেন প্রায় ১৫ লক্ষ ঋষি জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঢাকা শহর ও এর আশেপাশে ২৬টি ক্লাস্টার বা পাড়ায় প্রায় দুই লাখ ঋষি সম্প্রদায়ের অত্যন্ত অমানবিক অবস্থায় বসবাস করছে।তাদের বেশীরভাগই নিম্নবর্ণের এবং চামড়া জাত কাজের সাথে বিশেষ করে পাদুকা শিল্পের সাথে জড়িত।

জাতিগত এই সংখ্যালঘু ঋষিদের সমাজে “অস্পৃশ্য” সম্প্রদায় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তারা স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ন্যায় বিচারের পাশাপাশি অন্যান্য সাংবিধানিক অধিকারসহ বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত, জীবিকা অনিশ্চিত, সামাজিক পরিচয় ও কম মর্যাদা এবং শিক্ষা, অর্থনৈতিক সুযোগ বা ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রবেশাধিকার খুব কম।

এই সম্প্রদায়ের মানুষগুলো সামাজিক, মানবিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সুবিধাপ্রাপ্তি। থেকে পিছিয়ে আছে। এই গোষ্ঠীগুলি অবহেলা, বৈষম্য, সামাজিক প্রতিবন্ধকতাসহ নানা ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অথচ এসডিজি’র এজেন্ডা হচ্ছে “কাউকে বাদ দিয়ে নয়” তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুনির্দিষ্ট প্রতিবন্ধকতা দূর না করা পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাংবিধানিক ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রের সকল জনগোষ্ঠীর মানুষ তাদের মৌলিক/ মানবিক সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখার কথা উল্লেখ থাকলেও স্বল্প শিক্ষার হার এবং মানবিক, মানসিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে ঋষি সম্প্রদায় তাদের মৌলিক ও মানবিক অধিকার প্রাপ্তি থেকে উপেক্ষিত এবং অধিকাংশের কাছে তারা ঘৃণার পাত্র হিসেবে পরিগণিত।

তাই ঋষি জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার এবং সরকারি সেবায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাই রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার ও অঙ্গীকারে অন্তর্ভুক্তির জন্য ঋষি সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ প্রেস কনফারেন্সরে মাধ্যমে আহবান জানান অ্যাডভোকেসী ফোরাম।

জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আত্মকর্মসংস্থান প্রভৃতি বিষয়ে ঋষি সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রণয়ন করা, নিরাপদ পরিবেশে পানি, স্যানিটেশন, ইউটিলিটি পরিষেবা সহ বসবাসের ব্যবস্থা করা, ঋষি জনগোষ্টির ছেলেমেয়েদের জন্য উচ্চ শিক্ষায় কোটা বৃদ্ধি করার সুপারিশ করেন তারা।

প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্না, এসাসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ (এডাব) পরিচালক এ কে এম জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ গার্হ্যস্থ নারী শ্রমিক নেটওয়াক এর সাধারন সম্পাদক মোসাম্মৎ মোরশেদা বেগম, কাজীর বাগ পঞ্চায়েত সভাপতি সুজন দাস, সাধারন সম্পাদক কিশোর দাস, জিগাতলা পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি রতন দাস সহ অ্যাডভোকেসি ফোরামের সদস্যবৃন্দ।

Exit mobile version