
স্টাফ রিপোর্টার: পোশাক খাতের কাঁচামাল, আমদানি করতে হলেও বিশ্বমানের পোশাক তৈরি করে বাংলাদেশ। আর এই পোশাক রপ্তানির বড় বাজার উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো।
রপ্তানিমুখী কারখানায় শ্রমিক অধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে পাস হওয়া নিয়মগুলো (ডিউ ডিলিজেন্স) যথাযথভাবে প্রতিপালন করা না হলে জরিমানা বা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সেই কারখানার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদে ইউরোপীয় ক্রেতাদের বাধ্য করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ঢাকায় ইইউর রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
মঙ্গলবার ঢাকায় ইইউর ‘ডিউ ডিলিজেন্স ল’ এর ওপর ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত এক সেমিনারে তার এই সতর্কবার্তা আসে।
‘ডিউ ডিলিজেন্স ল’ অনুযায়ী নিয়মগুলো প্রতিপালনে যে খরচ বেড়ে যাবে, তা তুলে ধরে পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার তাগিদ দেন তারা। এসময় পোশাকের দর-কষাকষি করতে না পারায় ব্যবসায়ীদের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত।
হোয়াইটলি বলেন, যে ডিউ ডিলিজেন্স আইন করা হয়েছে, তা শুধু ক্রেতা–বিক্রেতার বিষয় নয়; সরবরাহ শৃঙ্খলে যুক্ত সবার পালনের জন্যই তা করা হয়েছে। এ নিয়মের শিশুশ্রম, বাধ্যতামূলক শ্রম, দাসত্ব (স্লেভারি), বন ধ্বংস, পরিবেশ দূষণ, ইকোসিস্টেমের ক্ষতি করা এবং মানবাধিকারের মত বিষয় রয়েছে।
এ সময় পশ্চিমা ক্রেতারা নতুন আইন করে, কমপ্লায়েন্সের কথা বললেও দামে ঠকায়, এমন অভিযোগও করেছেন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীরা। আলোচনায় তারা পোশাকের ন্যায্য দাম দাবি করে।
গার্মেন্টস ব্যবসায়িদের অভিযোগ, শ্রমিকদের মজুরি বাড়লেও পোশাকের দাম বাড়ায়নি বিদেশি ক্রেতারা। বাংলাদেশ থেকে ২ ডলারের কম দামে কেনা পণ্য ইউরোপে বিক্রি হয় ২০ ডলারে। পশ্চিমা দেশগুলো নিত্যনতুন আইন আর নানা নীতিকথা বললেও, পোশাক প্রস্তুতকারকদের দামে ঠকায়।
রপ্তানি বাড়াতে পণ্যের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি ও নতুন বাজারের খোঁজে বিজিএমইএ। সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান জানান, বিশ্বের শীর্ষ ১০০ গ্রিন ফ্যাক্টরির অর্ধেকই বাংলাদেশে।
পরিবেশ এবং মানবাধিকারের বিষয়গুলো নিশ্চিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ নতুন আইন করেছে। পোশাকের কম দাম নিয়ে অভিযোগের উত্তরে, ব্যবসায়ীদের উপরই ব্যর্থতার দায় চাপান ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যায়ে পরিবেশ ও মানবাধিকারের বিষয়গুলো যথাযথভাবে মানা হয় কিনা তা নিশ্চিত করতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ‘ডিউ ডিজিলেন্স’ আইন করেছে। বায়ারদের সাথে দর-কষাকষি করতে না পারার ব্যর্থতা ব্যবসায়িদের। এখানে কেউ চ্যারিটি আশা করতে পারেন না।
কম দামে পোশাক বিক্রি করতে পশ্চিমা ক্রেতারা বাধ্য করে বলেও অভিযোগ দেশীয় উৎপাদকদের।