ভালোবাসার শহর হিসেবেই বেশি পরিচিত প্যারিস। ফ্রান্সের এই শহরেই আয়োজিত হচ্ছে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত অলিম্পিকের এবারের আসর। এতে করে যেমন ফরাসিদের ১০০ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো, তেমনি বিশ্বের নানা প্রান্তের অ্যাথলেট এবং দর্শকদের মিলনমেলায় পরিণত হলো ভালোবাসার শহর প্যারিস।
ফ্রান্স অলিম্পিক সবশেষ আয়োজন করেছিল ১৯২৪ সালে। এরপর দীর্ঘ এক শতাব্দীর অপেক্ষা, ১০০ বছর পর তৃতীয়বারের মত গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের আয়োজন দেশটি। ফলে জমকালো আয়োজনে সবাইকে মুগ্ধ করে দিতেই চেষ্টার কমতি ছিল। তাতে যেমন ছিল ভিন্নতা তেমনি ছিল ইতিহাস, ঐতিহ্যের মিশেল।
অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৃষ্টি বাগড়া দিতে পারে এমন আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। বেরসিক বৃষ্টি হানা দিয়েছেও। তবে এর আগে আরও বড় শঙ্কা হয়ে এসেছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর আগে ফ্রান্সের রেল নেটওয়ার্কে ভয়াবহ হামলার খবর। এই হামলায় বন্ধ হয়ে যায় দেশটির রেল চলাচল, ফলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় দর্শকদের। তবে সব শঙ্কা কাটিয়ে জমকালোভাবেই উদ্বোধন হয়েছে অলিম্পিকের।
অলিম্পিকের ইতিহাসে এবারই প্রথম উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছে স্টেডিয়ামের বাইরে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দেখা মিলে কিংবদন্তি ফরাসি ফুটবলার জিনেদিন জিদানের। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্টেডিয়াম থেকে মশাল নিয়ে তিন শিশুর হাতে তা তুলে দিতে দেখা যায় জিদানকে, সেই তিন শিশু নৌকায় করে পৌঁছান সিন নদীতে। হ্যা, এই সিন নদীতেই এবার হয়েছে অলিম্পিকের উদ্বোধন।
এরপরই শুরু হয় অ্যাথলেটদের মার্চপাস্ট। বিশেষ বার্জে করে বর্নিল সাজে একে একে সিন নদীতে আসতে থাকে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। প্রথমেই আসে অলিম্পিকের জন্মভূমি গ্রিস, এরপর শরণার্থীদের দল এবং পরে একে একে আসতে থাকে আফগানিস্তান, আলবেনিয়া, আলজেরিয়া, জার্মানিসহ অন্য দলগুলো।
অস্তারলিজ ব্রিজ থেকে শুরু করে লুভ্য জাদুঘর এরপর পন্ত দে আর্টস ব্রিজ পেরিয়ে আইফেল টাওয়ারের কাছে এসে শেষ অ্যাথলেটদের প্যারেড। প্যারেডে এক পর্যায়ে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে আসে বাংলাদেশ দল যাতে পতাকা বহন করেন আর্চার সাগর ইসলাম।
এদিকে মার্চপাস্টের ফাঁকে ফাঁকেই তুলে ধরা ধরা হয় ফ্রান্সের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সেই সঙ্গে মনোরম পারফর্ম্যান্সে মাতোয়ারা করেন পপ তারকা লেডি গাগা। লেডি গাগা ছাড়াও পারফর্ম করেছেন রিম কে, মেটাল ব্যান্ড গজিরা ও আয়া নাকামুরা।
মার্চপাস্টের পর প্যারিস অলিম্পিক কমিটি প্রধান ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি প্রধানের ভাষণ, তারপর এবারের আসরের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রো। এরপর আইফেল টাও্যারে বর্ণিল লেজার শো সহ আরও বেশ কিছু আয়োজনে জমকালোভাবে পর্দা ওঠে প্যারিস অলিম্পিকের।