
টানা চার ম্যাচ জিতে বাছাইপর্ব খেলা ৬ দলের মধ্যে সবার আগে ২০২৫ মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৭ রানের জয়ে পাকিস্তানের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া নিশ্চিত হয়।
সিদ্রা আমিন (৮০) আর ফাতিমা সানার (৬২*) ফিফটিতে আগে ব্যাটিং করে ২০৫ রান তোলে পাকিস্তান। স্বাগতিক বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান তাড়ায় থাইল্যান্ড গুটিয়ে গেছে ১১৮ রানেই। তাতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সপ্তম দল হিসেবে জায়গা নিশ্চিত হয় পাকিস্তানের।
বিশ্বকাপে আর জায়গা বাকি আছে একটি। সেই জায়গা পেতে এ মুহূর্তে পাকিস্তান বাদে বাছাইপর্ব খেলা বাকি ৫ দলের মধ্যে সবার চাইতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। তবে হিসেবে রাখতে হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর স্কটল্যান্ডকেও। বাংলাদেশ সুবিধাজনক স্থানে থাকলেও বিশ্বকাপের টিকিট পেতে নিগার সুলতানা জ্যোতিদের জিলাপির মতো প্যাঁচানো কিছু সমীকরণের হিসাবও অতিক্রম করতে হবে।
বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচ জেতা বাংলাদেশ সর্বশেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে বসেছে। এতে ৪ ম্যাচ শেষে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন জ্যোতিরা। বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে পাকিস্তানের বিপক্ষে। আগামীকাল হতে যাওয়া সেই ম্যাচে জিতলে কোনো সমীকরণের মারপ্যাঁচ ছাড়াই বিশ্বকাপের টিকিট পাবেন জ্যোতিরা।
কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে যদি বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে যায়? তখনও অবশ্য সব আশা শেষ হয়ে যাবে না। পয়েন্ট টেবিল আবার রানরেটের হিসেবে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে খেলার আশা ভালোভাবেই বেঁচে থাকবে বাংলাদেশের। সেক্ষেত্রে তাকিয়ে থাকতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর স্কটল্যান্ডের দিকে। এমনকি বাংলাদেশ আগামীকাল হেরে গেলে এবং অন্যদিকে উইন্ডিজ ও স্কটিশরা দুই দলই নিজেদের ম্যাচে জিতলেও বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ থাকবে জ্যোতিদের।
সেটা কীভাবে? আগেই বলা হয়েছে, পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের পয়েন্ট ৬। আর সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে আছে যথাক্রমে স্কটল্যান্ড ও উইন্ডিজ। পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার পাশাপাশি রানরেটেও বাংলাদেশের চেয়ে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে আছে ওই দুদল। আর এটাই শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারলেও বিশ্বকাপে বাংলাদেশের খেলার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের নেট রানরেটে (+)১.০৩৩। অন্যদিকে স্কটল্যান্ড রানরেট (+)০.১৩৬ ও উইন্ডিজের (-)০.২৮৩।
স্কটল্যান্ড তাদের শেষ ম্যাচ খেলবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে স্কটল্যান্ড হারলে কোনো সমীকরণ ছাড়াই বিশ্বকাপ স্বপ্ন শেষ হয়ে স্কটিশদের। আর যদি জেতেও, জিততে হবে বিশাল ব্যবধানে। কারণ স্কটিশদের চেয়ে ০.৮৯৭ রানরেট ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য সমীকরণটা আরও জটিল। নিজেদের শেষ ম্যাচে শুধু থাইল্যান্ডকে হারালেই হবে না, উইন্ডিজের জয়ের ব্যবধানটা হতে হবে আরও বড়। পয়েন্ট তালিকায় চারে থাকলেও ৬ দলের মধ্যে রানরেটে সবচেয়ে পিছিয়ে উইন্ডিজই। সেই ঋণাত্মক রানরেটকে ধনাত্মক বানিয়ে বাংলাদেশকে টপকে যাওয়া- কাজটা সহজ নয় মোটেও।
অর্থাৎ, বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের কাছে বিশাল ব্যবধানে হারে এবং অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা স্কটল্যান্ডের অন্তত কোনো একটি দল নিজেদের ম্যাচে বিশাল ব্যবধানে জেতে, তাহলেই কেবল বাংলাদেশের বাদ পড়ার ঝুঁকি থাকে।
অবশ্য বাংলাদেশ আগামীকাল জিতে গেলে, এসব ‘জিলাপি’র মতো সমীকরণের হিসাবের কোনো দরকারই পড়বে না!
ডেইলি ঢাকা প্রেস/ ১৮ এপ্রিল ২০২৫/ জেডআরসি