
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। সামাজিক মাধ্যম এক্সে (আগের টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে খামেনি লেখেন, “মর্যাদাবান হায়দারের নামে, যুদ্ধ শুরু হলো।”-খবর আল জাজিরার।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারির প্রেক্ষাপটে খামেনি এমন মন্তব্য করেন বলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে।
কয়েক মাস ধরে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে চলে। গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার হুমকি দিয়ে আসছে ইরানও।
দুই দেশের এমন উত্তেজনার মধ্যে গত ১৩ জুন ইরানে আকস্মিক হামলা চালায় ইসরায়েল। পাঁচ দিন ধরে চালানো হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান, আইআরজিসি প্রধানসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যার দাবি করে ইসরায়েল।
নিহত হয়েছেন দেশটির কয়েকজন পরমাণুবিজ্ঞানীও। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনা। আরও ১০টি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গ্যালান্ত।
আয়াতুল্লাহ খামেনিকেও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “ইরানের প্রতিবেশী এক স্বৈরশাসকের সঙ্গে কী ঘটেছিল, তা খামেনি স্মরণ করতে পারেন।” তিনি এমন মন্তব্যে সম্ভবত ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কথা বোঝাতে চেয়েছেন।
ইসরায়েলি হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইরানও। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইসরায়েলি বহু ভবন ও সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
দুই দেশের সংঘাতে ইতোমধ্যে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণ ঝরেছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এমন সংঘাতের মধ্যে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সামাজিক মাধ্যমে একাধিক পোস্ট দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এক পোস্টে খামেনিকে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প লেখেন, “আমরা জানি তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ নেতা’ কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি সহজ লক্ষ্যবস্তু, তবে এখনই তাকে বের করে (হত্যা) আনছি না।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, “আমরা চাই না বেসামরিক নাগরিক বা মার্কিন সেনাদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হোক। আমাদের ধৈর্য ক্রমেই কমছে।”
আরেক পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, ইরানের আকাশসীমা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে। সবশেষ পোস্টে ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ করার আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় খামেনি লিখেছেন, “আমাদের সন্ত্রাসী ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দিতে হবে। জায়নবাদীদের কোনো দয়া দেখানো হবে না।”