
আনন্দলোক ডেস্ক: সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই) আয়োজিত চারটি স্বল্পমেয়াদী কোর্সের সনদপত্র প্রদান এবং তারুণ্যের উৎসবের আওতায় সাংস্কৃতিক আয়োজিত হয়। ২০২৫ সালে বিসিটিআইয়ের তত্বাবধানে এই প্রথম চার সপ্তাহব্যাপী চারটি স্বল্পমেয়াদী কোর্স পরিচালিত হয়।
সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা । অনুষ্ঠানের আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান এনডিসি। এবং কোর্স মেন্টর ও গভর্ণিং বডির সদস্য রফিকুল আনোয়ার, মো. আরিফুর রহমান ও নায়েলা আজাদ নুপুর। এই আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই)-এর প্রধান নির্বাহী আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন।
চারটি কোর্স ছিল ‘বেসিক ফিল্ম কোর্স’, ‘২য় ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স’, ‘৩য় চলচ্চিত্র সম্পাদনা প্রশিক্ষণ পাঠ্যধারা’ এবং ‘৮ম চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনয় প্রশিক্ষণ কোর্স’। প্রশিক্ষনার্থীদের উপস্থিতিতে তাদের নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর পর সকলের হাতে সনদপত্র ও উপহার তুলে দেওয়া হয়।
আয়োজনে তথ্য উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। তিনি এই কোর্সের প্রশিক্ষনার্থীদের প্রাপ্ত শিক্ষাকে কাজে প্রয়োগ করার অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন, সিনেমা তথ্য সরবরাহের জন্য সব চাইতে বড় ক্যানভাস। এর মাধ্যমেই সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সঠিক চিত্র তুলে ধরা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, চলচ্চিত্র এমন একটি ভাষা, যার বাণিজ্যিক চাহিদা বিশ্বব্যাপী। আর বাংলা চলচ্চিত্রের বিপণন ক্ষেত্র শুধু বাংলাদেশ নয়। সারাবিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের মাঝে এর চাহিদা আছে। গল্প ও নির্মাণ আন্তর্জাতিক মানের হলে ডাবিং করে অন্যান্য দেশেও চলচ্চিত্রের বাণিজ্যিক রপ্তানিকরণ সম্ভব। উপদেষ্টা তার দীর্ঘ বক্তব্যে ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ বাস্তবায়নের আওতায় ২০২৪ সালের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের নিয়ে চারটি স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজনের জন্য বিসিটিআইকে প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
একই আয়োজনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন এবং বিসিটিআই ও নতুন সম্ভাবনা নিয়ে ইতিবাচক অগ্রগতির আশা প্রকাশ করেন। এছাড়া জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট-এর মহাপরিচালক মুহম্মদ হিরুজ্জামান এনডিসি, প্রশিক্ষক রাফিকুল আনোয়ার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই) এর প্রধান নির্বাহী আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
বিসিটিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও নির্মাতা, অভিভাবক ও প্রশিক্ষণার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন। চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব নার্গিস আক্তার, জনাব শাকুর মজিদ, ফজলে হকসহ উপস্থিত অতিথিদের অনেকেই প্রশিক্ষনার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। তারা নতুনদের জন্য অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সকলের দরজা উন্মুক্ত করার আহ্বান জানান।
সবশেষে আয়োজনের তৃতীয় পর্বে তারুণ্যের উৎসবের আওতায় বিসিটিআইয়ের প্রশিক্ষনার্থীদের আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য, চারটি স্বল্পমেয়াদী কোর্সে ৩৬ জুলাই ছাত্র-গণআন্দোলেন বিষয়ক ৪টি প্রামাণ্যচিত্র ও ১টি কাহিনীচিত্র, ১টি গ্রিন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং কক্সবাজারের লবণ শিল্পের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করা হয়। এই আয়োজনে বেসিক ফিল্ম কোর্সের মেন্টর আরিফুর রহমান এর নেতৃত্বে ২৭ জন, ২য় ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্সে মেন্টর লাবিব নাজমুস সাকিব ও রফিকুল আনোয়ারের নেতৃত্বে ১১ জন, ৩য় চলচ্চিত্র সম্পাদনা প্রশিক্ষণ পাঠ্যধারায় মেন্টর ইকবাল কবির জুয়েল এর নেতৃত্বে ১৩ জন এবং ৮ম চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনয় ও সেট ডিজাইন প্রশিক্ষণ কোর্সে মেন্টর নায়লা আজাদ নুপূর ও আখতানিন খায়ের তানিন এর নেতৃত্বে ০৯ জন প্রশিক্ষণার্থীকে সনদপত্র অর্জন করেন। এছাড়াও চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রতিষ্ঠিত প্রশিক্ষক এই কোর্সগুলোতে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে।