ভারতের লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলোয় নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসনের নিশ্চয়তা রেখে দেশটির লোকসভায় উত্থাপিত ঐতিহাসিক একটি বিল পাস হয়েছে।
বিবিসি জানায়, বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) কয়েক ঘণ্টাব্যাপী উত্তপ্ত বিতর্কের পর লোকসভায় পাস হয় বিলটি। এখন প্রয়োজন রাজ্যসভার আইনপ্রণেতাদের অনুমোদন। সেখানে বিলটি পাস হলে তা ভারতের রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য চলে যাবে। অনুমোদনের পরই তা আইনে পরিণত হবে। তবে তা বাস্তবায়নের জন্য ভারতে আদমশুমারি সমাপ্তির ওপর অনেকটা নির্ভর করছে।
ভারতের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। কিন্তু সংসদে মাত্র ১৫ শতাংশ এবং রাজ্য বিধানসভাগুলোয় মাত্র ১০ শতাংশ আসনে নারী আইনপ্রণেতা আছেন। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু নারী আইনপ্রণেতাদের অংশগ্রহণের নিরিখে দেশটি অনেক পিছিয়ে।
১৯৯৬ সালে নারী কোটা বিলটি সর্বপ্রথম প্রস্তাব করা হয়। তবে কয়েক যুগ ধরে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার মুখে এটি অমীমাংসিত অবস্থায় থাকে। লোকসভায় দেয়া ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিলটি পাসের জন্য সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
তিনি ভারতের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আরও বেশি করে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার জন্য বর্তমান লোকসভাকে ‘ঐতিহাসিক আইনসভা’ হিসেবে অভিহিত করেন।
বিলটির পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৫৪ জন এমপি ভোট দেন আর এর বিরোধিতা করেন দুজন এমপি। বিলটির ওপর প্রায় ৮ ঘণ্টা বিতর্ক চলে। কিছু সদস্য বিলের প্রতি সমর্থন জানালেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী জানান, তার দল প্রস্তাবিত আইন প্রণয়নের বিষয়টিকে সমর্থন করে। তা ছাড়া তিনি এটির দ্রুত বাস্তবায়নেরও দাবি জানান।
আইনটি বাস্তবায়নে দেরি হলে তা নারীদের প্রতি অবিচার করা হবে বলেও উল্লেখ করেন সোনিয়া। বেশ কয়েকজন বিরোধী এমপি পিছিয়ে পড়া অন্যান্য শ্রেণির নারীদের জন্য আলাদা কোটা প্রবর্তনের দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে গত বুধবার পার্লামেন্টে সোনিয়া গান্ধী বলেন, সরকারের উচিত গোত্রভিত্তিক একটি শুমারি পরিচালনা করা অথবা পিছিয়ে পড়া অন্যান্য শ্রেণির মানুষের একটি তালিকা তৈরি করা। কিছু বিরোধী এমপি অবশ্য এই বিল পাসের প্রক্রিয়াটিকে ক্ষমতাসীন দলের আইওয়াশ হিসেবে বর্ণনা করেন।