রাজশাহী : নাসিক রেট এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজের ফলন গত মৌসুমে ভালো হওয়ায় এই মৌসুমেও এ জাতের পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন বহু কৃষক। এ জাতের চারটি পেঁয়াজের ওজন এক কেজি হয়। প্রতিবিঘা জমিতে এ জাতের পেঁয়াজ আড়াইশ মণ ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্যমতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চারটি পেঁয়াজে এক কেজি ফলন পাওয়া যাবে। চারঘাট উপজেলায় প্রায় ২৫০ বিঘা জমিতে নাসিক রেট এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রতিবিঘা জমিতে ২৫০ মণ ফলন পাবে বলে প্রত্যাশা কৃষি দপ্তরের। এরই মধ্যে চারঘাটে ৭০ বিঘা জমিতে এ জাতের পেঁয়াজের চাষ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকি ১৮০ বিঘা জমি চাষাবাদ চলছে।
উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় ১৭ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। নতুন নতুন ফসলের ভালো ফলন এবং পরিচর্যার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন নিয়োজিত সব কর্মকর্তা। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণে সরেজমিনে পরিচর্যার বিষয়ে নিজ হাতে কাজ করে বুঝিয়ে দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
পৌরসভায় মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, সরকার থেকে বরাদ্দকৃত কৃষির সব পণ্য যথাসময়ে কৃষকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। একজন কৃষককে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের জন্য ১ কেজি বীজ, ২০ কেজি ডিএপি, ২ কেজি এমওপি, রোল প্লাস্টিক সুতা, ১৫০ বর্গমিটার পলিথিন, ৩০০ গ্রাম লাইলন সুতলি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বালাইনাশক হাদাক ১০ গ্রাম, এমিটাপ ৫০ মিলিসহ নগদ ২ হাজার ৮০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে একজন কৃষি উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, তিনি পড়ালেখার শুরু থেকেই পৈতৃক জমিতে কৃষিকাজ করে আসছেন। ২০০৮ সালে তার পড়ালেখা শেষ হয়। বর্তমান তিনি উদ্যোক্তার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। তিনি প্রায় ৩৫ বিঘা জমিতে নানা ধরনের ফসল চাষাবাদ করছেন।
সম্প্রতি সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুলের পরামর্শে পরীক্ষামূলক আড়াই বিঘা জমিতে নতুন জাতের নাসিক রেট এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজের চাষ করেছেন। ভালো ফলন হলে ৪টি অথবা গড়ে ৫-৬টিতে ১ কেজি পেঁয়াজের ফলন পাওয়া যাবে।
কৃষিবিদ লুৎফুন নাহার বলেন, নাসিক রেট এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজটি ভারত থেকে সংগ্রহ করা। সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত বীজ ও প্রয়োজনীয় পণ্য ও নগদ অর্থ দিয়ে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। গত বছর থেকে এই জাতের পেঁয়াজের চাষ শুরু হয়েছে।
ভালো ফলন হলে ৪টি পেঁয়াজে ১ কেজি হয়। তবে গড়ে ৫-৭টি হলে ১ কেজি পেঁয়াজের ফলন পাওয়া যায়। গত মৌসুমে ফলন ভালো হওয়ায় এবার অনেক কৃষক পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতিবিঘায় ২৫০ মণ পেঁয়াজের ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।