ঢাকা : খেলাপি ঋণ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে নানা পদক্ষেপ নিলেও খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ এখন বেড়ে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
অর্থাৎ মোট ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশই এখন খেলাপি। অবশ্য বাস্তবে এ অঙ্ক অনেক বেশি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ এখানে পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণের হিসাব নেই। এগুলো যোগ করলে আড়াই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
রোববার (০১ অক্টোবর) অনুমোদন হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ-সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালের জুন মাস শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। খেলাপি ঋণের এ অঙ্ক দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে অর্থাৎ এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। শেষ ছয় মাসে (ডিসেম্বর ২০২২ থেকে জুন ২০২৩) বেড়েছে ৩৫ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। তিন মাস আগে মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।
প্রথম তিন (জানুয়ারি-মার্চ) মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। আবার গত বছরের জুনের তুলনায় এ বছর জুনে এসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩০ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। ২০২২ সালের জুনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের ২০ জুন জানায়, যদি কোনও গ্রাহক চলতি বছরের জুনের মধ্যে ঋণের কিস্তির অর্ধেক টাকা জমা দেন, তিনি খেলাপি হবেন না। ফলে যারা ঋণ নিয়ে কিস্তি শোধ না করে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিলেন, তারা কিস্তির অর্ধেক টাকা জমা দিয়েই নিয়মিত গ্রাহক হওয়ার সুযোগ পান। তবে শুধু মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হয়। সাধারণত ব্যবসা শুরু করা বা শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে মেয়াদি ঋণ নেওয়া হয়।
এদিকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ। সংস্থাটির শর্ত অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে।