
হামাস-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় রবিবার দুপুর পর্যন্ত নিহত ৭০০ অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে ইসরায়েলের ৩০০ এর বেশি। ফিলিস্তিনি ৪০০। একই সময়ে আহত হয়েছে কয়েক হাজার। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
রোববার (০৮ অক্টোবর) ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, হামাসের ৪০০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। আমরা হামাসের নেতাদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছি।
কিন্তু প্রায় একই সময়ে ফিলিস্তিনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ পর্যন্ত অন্তত ৩১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় দুই হাজার।
লেবাননের হিজবুল্লাহ রবিবার সকালে উত্তর ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়েছে। রবিবার সকালে এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, আমরা সেবা ফার্মস অঞ্চলে রকেট ও গোলা হামলা চালিয়েছি। এ সময় ইসরায়েলি সেনাদের তিনটি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। আমাদের অধিকৃত ভূমি উদ্ধার ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে এই হামলা চালানো হয়েছে।
>> গাজার বাসিন্দাদের পালানোর নির্দেশ
সেবা ফার্মস দক্ষিণ লেবাননের ইসরায়েলে অধিকৃত একটি অঞ্চল। এটি ইসরায়েলের উত্তরে অবস্থিত। হিজবুল্লাহর হামলার তড়িৎ জবাব দিয়েছে ইসরায়েল। তারাও হিজবুল্লাহর ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি একটি ড্রোন সেবা ফার্মসে হিজবুল্লাহর একটি ঘাঁটিতে আঘাত করেছে। এসব হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর জানা যায়নি।
শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইসরায়েলের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। রাত ১টা ১৫ মিনিটে হামাসের ইজ আদ্দীন আল-কাসিম ব্রিগেডস কমান্ডার মুহাম্মদ দাইস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন। তাদের এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় আল-আকসা ফ্লাড। আল-আকসা মসজিদের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করার জবাবে এই অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হামাস। হামাসের দাবি, তারা ইসরায়েলের দিকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার রকেট ছুড়েছে।
এবারের হামলার লক্ষণীয় বিষয় হলো, হামাসের যোদ্ধারা প্যারাগ্লাইডে চড়ে আকাশ পথে, নদী ও স্থল পথে ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করেছেন। অর্থাৎ তারা ইসরায়েলের গোয়েন্দা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। ইসরায়েলের অন্তত সাতটি গ্রামে তাদের সেনাদের সঙ্গে হামাসের যোদ্ধাদের বন্দুক যুদ্ধ হয়েছে। হামাসের যোদ্ধারা একটি পরিবারকেও জিম্মি করেছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েলের সেনারা।
শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) রাত দেড়টার সময় গাজায় বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েলের আইডিএফ। তাদের এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় সোর্ডস অব আইরন।
আইডিএফ হামলা শুরুর চার মিনিটের মাথায় হামাসের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহু যুদ্ধ ঘোষণা করেন। মন্ত্রীদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক শেষে নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, ইসরায়েলের প্রিয় জনগণ। আমরা কোনো অভিযান নয় যুদ্ধ শুরু করেছি।
ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তবে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ১৪ তলাবিশিষ্ট একটা বেসামরিক ভবন ধ্বংস হয়েছে। সূত্র : আলজাজিরা, আল-মনিটর