ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। নিজের অর্থে আমরা পদ্মা সেতু করে দেখিয়েছি। এই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না, বাঙালি ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত নতুন রেলপথের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। ২০০৬ সালে ৪১ ভাগ ছিল দারিদ্র্যের হার। আমাদের পদক্ষেপের ফলে তা কমিয়ে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ছিল ২৫ দশমিক ৫ ভাগ, তা এখন ৫ দশমিক ৬ ভাগে নেমে এসেছে। ইনশাআল্লাহ, আর কেউ হতদরিদ্র থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। ৮ লাখ ৪০ হাজার ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে বিনামূল্যে ঘর করে দিয়েছি। জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাকি যা আছে, তাও করে দেব। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘মাঝে-মাঝে একটা দুঃসময় আসে। বিশ্বব্যাপী এই দুঃসময়, আমাদের ওপরও আছে। কিন্তু আমরা যদি আমাদের জমিতে চাষ করি, আমাদের ফসল নিজেরা ফলাই…আজকে মাছ, মাংস, সবজি– সবকিছু উৎপাদন হচ্ছে। এই উৎপাদনে আমাদের সবাইকে মনোযোগ দিতে হবে। কারও কাছে হাত পেতে নয়, কারও কাছে মাথা নিচু করে নয়– আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্ব দরবারে সম্মানের সঙ্গে চলবে।’
তিনি বলেন, ‘আজ যারা ভোটের কথা বলে, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে, আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই এদেশে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। আর যারা নির্বাচনের ধুয়া তোলে, আমাদের প্রতিদিন ক্ষমতা থেকে হটায়– তারা কখনও অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না।
কারণ তাদের প্রতিষ্ঠা হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত থেকে। যে কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনে পেয়েছিল মাত্র ২৯টা সিট। তারপর থেকে তারা নির্বাচন বয়কট, নির্বাচন নিয়ে খেলা, অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ হত্যা করা, মানুষের জীবন নিয়ে খেলা – এই ধ্বংসযজ্ঞে মেতে আছে।’
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি জাতির ভাগ্য নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে। এই দেশ আমাদের। রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে। আমাদের লক্ষ্য– ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি– আমরা গড়ে তুলব।’